দুই মাস থেকে ২৫টির বেশি ভিসেরা নমুনা রংপুর মেডিকেল কলেজের (রমেক) ফরেনসিক বিভাগে পড়ে আছে। রমেকে মৃতদেহের ভিসেরা পরীক্ষার কোনো ব্যবস্থা নেই। এখানে হত্যা ও রহস্যজনক মৃত ব্যক্তিদের ভিসেরা রাজশাহীর ফরেনসিক ল্যাবে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হচ্ছে। ফলে ভিসেরা জটে বিচারপ্রার্থীদের বিচার পেতে দীর্ঘসূত্রতার সৃষ্টি হচ্ছে। ভিসেরা রিপোর্ট পেতে দেরি হওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে মামলার তদন্ত কার্যক্রম।
রমেক সূত্রে জানা গেছে, কয়েক বছর আগেও ঢাকার মহাখালীতে যেতে হতো ভিসেরা পরীক্ষার জন্য। প্রায় তিন বছর থেকে রংপুরের ভিসেরা পরীক্ষা করতে রাজশাহীতে পাঠানো হচ্ছে। সেখানের রিপোর্ট পেতে দীর্ঘ সময় লাগছে। জানা গেছে, প্রতিটি বিভাগীয় শহরের ফরেনসিক ল্যাবে ভিসেরা পরীক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হলেও এ ক্ষেত্রে রংপুরকে করা হয়েছে বঞ্চিত।
ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসকরা বলছেন, ভিসেরার বিষয়টি সিআইডি পুলিশ মনিটরিং করে। তারাই ফরেনসিক ল্যাবে ভিসেরা নিয়ে পরীক্ষা করে আদালতে রিপোর্ট প্রদান করে। কিন্তু রংপুরের পুলিশ এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করছে না বলে জানিয়েছে ফরেনসিক বিভাগ। সূত্রমতে গত এক বছরে রংপুর থেকে রাজশাহী ফরেনসিক ল্যাবে ১০০টির বেশি ভিসেরা পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে রিপোর্ট এসেছে অর্ধেকের কম। বাদবাকি ভিসেরার রিপোর্ট কবে নাগাদ আসবে তা নির্ভর করছে রাজশাহী ফরেনসিক বিভাগের ওপর। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন ভিসেরার জন্য হত্যাসহ বিভিন্ন কারণে মৃতদেহের লিভার, দুটি কিডনির অর্ধেক ইত্যাদি পাঠানো হয়। মৃতদেহ থেকে এসব সংগ্রহ করে পাঠানোর সময় আবহাওয়া ও পরিবেশগত কারণে এটি নষ্ট কিংবা এর মান ভিন্ন রকমও হতে পারে। রংপুরে ভিসেরা পরীক্ষার সুয়োগ না থাকায় মৃত ব্যক্তির রক্তের নমুনা সংগ্রহ করতে জটিলতায় পড়তে হচ্ছে। বিশেষ করে অজ্ঞাত লাশের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে তা সংরক্ষণ করা জটিল হয়ে পড়েছে।
রমেক ফরেনসিক বিভাগের প্রধান (ভারপ্রাপ্ত) ডা. শারমিন বলেন, ‘ভিসেরা রিপোর্টের জন্য আমাদের রাজশাহী ফরেনসিক বিভাগের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। ভিসেরা পরীক্ষার বিষয়টি সিআইডি পুলিশ দেখাশোনা করে। দুই মাস থেকে ২৫টির মতো ভিসেরা ফরেনসিক বিভাগে পড়ে রয়েছে। পুলিশ নিচ্ছে না।’
রংপুরের মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মজিদ আলী বলেন, ‘রমেক ফরেনসিক বিভাগ থেকে ভিসেরা পরীক্ষার জন্য পুলিশ নিচ্ছে না, এমন অভিযোগ পেলে আমরা ব্যবস্থা নেব।’