২০০৩ সালের ১৮ জানুয়ারি ঢাকার জাতীয় স্টেডিয়ামে ভারতকে ২-১ গোলে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। মতিউর রহমান মুন্নার গোল্ডেন গোলে সেদিন বাংলাদেশ উঠেছিল সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে, আর ২২ বছর পর সেই জয়ই হয়ে আছে ভারতের বিপক্ষে লাল-সবুজের সর্বশেষ সাফল্য।
আজ (মঙ্গলবার) রাত ৮টায় একই ভেন্যুতে এএফসি এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে আবার মুখোমুখি হবে দুই দল। আন্তর্জাতিক ফুটবলে এটি হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ-ভারতের ৩০তম লড়াই।
২০০৩ সালের ঐ ম্যাচের পর দুই দলের দেখা হয়েছে ১০ বার। কিন্তু কোনোবারই জিততে পারেনি বাংলাদেশ। ৪ ম্যাচে হেরেছে, বাকি ৬টি ড্র। সর্বশেষ এ বছর ২৫ মার্চ শিলংয়ে ম্যাচটি গোলশূন্যভাবে শেষ হয়।
ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের সাফল্য ইতিহাসও খুব সমৃদ্ধ নয়। ১৯৭৮ থেকে এখন পর্যন্ত ২৯ ম্যাচে বাংলাদেশের জয় মাত্র তিনটি, যেখানে ভারতের জয় ১৩ ম্যাচে, বাকি ১৩ ম্যাচ হয়েছে ড্র।
বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক ফুটবলে ভারতকে হারিয়েছে তিনটি স্মরণীয় ম্যাচে। ১৯৯১ সালে এসএ গেমসে রুমি রিজভী করিমের জোড়া গোলে প্রথমবার ভারতের বিরুদ্ধে জয় পায় লাল-সবুজের দল। এরপর ১৯৯৯ সালে একই গেমসের সেমিফাইনালে টিপুর একমাত্র গোলে ১-০ ব্যবধানে ভারতকে হারিয়ে বাংলাদেশ পৌঁছে যায় ফাইনালে এবং সেই আসরেই প্রথমবার ফুটবলে স্বর্ণ জেতে। সর্বশেষ ২০০৩ সালে ঢাকায় সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনালে মতিউর রহমান মুন্নার গোল্ডেন গোলে ভারতকে পরাজিত করে বাংলাদেশ। সেই জয়ের ধারাবাহিকতায় ফাইনালে মালদ্বীপকে হারিয়ে সাফের শিরোপাও জিতেছিল দলটি।
এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের পরবর্তী পর্বে ওঠার আশা নেই দুই দলেরই। তবে বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ মানেই মর্যাদা, আবেগ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতার লড়াই।
বাংলাদেশ দলের শক্তিতে যোগ হয়েছে দুই প্রবাসী ফুটবলার- হামজা দেওয়ান চৌধুরী ও শমিত সোম। লেস্টার সিটির সাবেক মিডফিল্ডার হামজা জাতীয় দলের হয়ে ৬ ম্যাচে করেছেন ৪ গোল। আজও তার কাছেই তাকিয়ে থাকবে বাংলাদেশের সমর্থকরা।
ভারতীয় দলটি এসেছে কিছুটা দুর্বল স্কোয়াড নিয়ে। পাঁচজন ফুটবলারের আন্তর্জাতিক ফুটবলে অভিষেক হতে পারে আজকের ম্যাচে। কোচ খালিদ জামিল মোহনবাগানের কোনো ফুটবলারকে দলে ডাকেননি। আগস্টে দায়িত্ব নেওয়ার পর এটাই তার সবচেয়ে বড় পরীক্ষার একটি।
বাংলাদেশ কোচ হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরা জানিয়েছেন, দল শক্তিশালী অবস্থায় আছে এবং সুযোগ পেলে জয়ের লক্ষ্যেই নামবে লাল-সবুজের যোদ্ধারা। যদি আজ জিততে পারে বাংলাদেশ, তাহলে ২২ বছরের দীর্ঘ অপেক্ষা শেষ হবে, ভারতবিরোধী জয়ের স্মৃতি ফিরবে ঢাকার মাঠে।
এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে দীর্ঘদিন ধরেই হতাশাজনক ফল করে আসছে বাংলাদেশ। ২০১৯ বাছাইয়ে ৮ ম্যাচে একটিও জয় পায়নি দলটি। মাত্র ১টি ড্র করতে পেরেছিল, বাকিগুলো ছিল পরাজয়।
২০২৩ বাছাইয়েও চিত্র একই। ৮ ম্যাচে ২টি ড্র ছাড়াও বাকি ৬টিতেই হেরেছে বাংলাদেশ। চলমান ২০২৫ বাছাইয়েও এখন পর্যন্ত জয়ধারা ধরা দেয়নি; ৪ ম্যাচে ২টি ড্র বাংলাদেশের সান্ত্বনা।
আজকের ম্যাচ শুধু পয়েন্টের জন্য নয় ২২ বছরের আক্ষেপ ঘোচানোর লড়াই।
বিডি প্রতিদিন/মুসা