সৌদি আরবের সঙ্গে সিভিল (বেসামরিক) পারমাণবিক শক্তি ও প্রযুক্তিতে দীর্ঘমেয়াদি সহযোগিতার বিষয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।
গত সপ্তাহের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি মন্ত্রী ক্রিস রাইট এই তথ্য জানান।
আজ মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন সৌদি ক্রাউন প্রিন্স। সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সব ঠিক থাকলে হোয়াইট হাউসে মঙ্গলবারই এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে পারে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ওয়াশিংটন ও রিয়াদের মধ্যে পারমাণবিক সহযোগিতার বিস্তারিত তথ্য এ বছরের শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হবে।
তবে নাম গোপন করার শর্তে আলোচনা সংশ্লিষ্ট এক ব্যক্তি সোমবার সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান তার সফরের সময় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি সিভিল (বেসামরিক) পারমাণবিক সহযোগিতা চুক্তির কাঠামো স্বাক্ষর করবেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সব ঠিক থাকলে এদিনই চুক্তি স্বাক্ষর করতে পারেন।
মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মতে, মার্কিন আইনে সাধারণত অন্য কোনও দেশের কাছে উল্লেখযোগ্য পারমাণবিক উপকরণ—যেমন রিঅ্যাক্টর জ্বালানি, রিঅ্যাক্টর সরঞ্জাম বা গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রফতানি করতে হলে আগে একটি ১২৩ অ্যাগ্রিমেন্ট থাকা বাধ্যতামূলক। সৌদি ওই শর্ত মেনেই এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করবে বলে জানিয়েছে সৌদি গেজেট।
‘১২৩ অ্যাগ্রিমেন্ট’ সাধারণত এমন শর্ত রাখে যাতে বলা হয়, পারমাণবিক প্রযুক্তি শান্তিপূর্ণ কাজে ব্যবহৃত হবে এবং প্রসার (যেমন পারমাণবিক অস্ত্র) এড়াতে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা থাকবে।
তবে সৌদি আরবের একাধিক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, সৌদি আরব এখনও এমন সব শর্তাবলীর জন্য পুরোপুরি রাজি হয়নি। তবে চুক্তি স্বাক্ষর হলে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া প্রযুক্তিটির সামরিক ব্যবহার কঠোরভাবে নিষিদ্ধ রাখা হতে পারে।
তবে মার্কিন জ্বালানি মন্ত্রী ক্রিস রাইট বলেছেন, “সৌদি আরবের সঙ্গে অবশ্যই একটি ১২৩ পারমাণবিক চুক্তি হবে।”
সৌদির জ্বালানি মন্ত্রী বলেছেন, তারা পারমাণবিক কার্যকলাপের ওপর সব শর্ত মেনে নিতে প্রস্তুত।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সৌদি আরবের ‘ভিশন ২০৩০’ পরিকল্পনার একটি অংশ হিসেবে পারমাণবিক শক্তি ব্যবহার করার পরিকল্পনা রয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশটি তাদের জ্বালানির উৎস বৈচিত্র্য করা এবং কার্বন নির্গমন কমিয়ে শক্তি ভবিষ্যৎ নিরাপদ করতে পারমাণবিক পথে হাঁটছে। যুক্তরাষ্ট্রও পারমাণবিক কারিগরি ও জ্বালানিতে সৌদিকে সহযোগিতার মাধ্যমে নিজের কৌশলগত ও অর্থনৈতিক স্বার্থ দেখতে পারে। সূত্র: রয়টার্স
বিডি প্রতিদিন/একেএ