শেখ হাসিনার ফাঁসির রায়ে রংপুরে আনন্দ মিছিল, মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা ও মিষ্টি বিতরণ করা হয়েছে। ভারত থেকে শেখ হাসিনাকে নিয়ে এসে দ্রুত বিচারের রায় কার্যকরের দাবি জানিয়েছেন শহীদ আবু সাঈদের বাবা-মা ও সহপাঠিরা। সেই সাথে গণঅভ্যুত্থানে আহত ও শহীদ পরিবারের মামলাগুলোরও দ্রুত বিচার ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন তারা।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ফাঁসির রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে শহীদ আবু সাঈদের পরিবার। সোমবার বিকেলে রায় ঘোষণার পর পরিবারের সদস্যরা গণমাধ্যমে তাদের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন বলেন, শেখ হাসিনাকে ফাঁসির রায় দেয়ায় কিছুটা হলেও আমার অন্তরের কষ্ট প্রশমিত হলো। শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে নিয়ে এসে অতি দ্রুত বাংলার মাটিতে তার ফাঁসি কার্যকর করা হোক। জীবদ্দশায় আমার ছেলের খুনীর ফাঁসি যেন দেখে যেতে পারি।
আবু সাঈদের মা মনোয়ারা বেগম বলেন, আমার ছেলেকে তো আর ফিরে পাব না। তাই আমি চেয়েছিলাম আমার ছেলের হত্যাকারীদের শাস্তির আওতায় আনা হোক। আজকে এ রায়ে আমরা অনেক খুশি।
আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী বলেন, গত ১৭ বছরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের ফ্যাসিস্ট কায়দায় খুন, গুম, হত্যা করে এই দেশকে একনায়কতন্ত্রের মাধ্যমে দখল করে রেখেছিল শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার ফাঁসির রায় কার্যকর হলে সেটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে এবং এরপর থেকে কোন দল বা ব্যক্তি অগণতান্ত্রিকভাবে দেশ পরিচালনা করে স্বৈরাচার হয়ে উঠতে পারবে না। আমরা চাই জুলাই আন্দোলনে শহীদ, মূখ্য ভূমিকা পালন করা যোদ্ধাদের পরিবারের নিরাপত্তা যেন এই রাষ্ট্র নিশ্চিত করে।
এদিকে শেখ হাসিনার ফাঁসির আদেশ হওয়ার পর আনন্দমিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করেছে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সোমবার বিকেলে শহীদ আবু সাঈদের সহযোদ্ধারা ক্যাম্পাস থেকে একটি আনন্দমিছিল নিয়ে শহীদ আবু সাঈদ চত্ত্বর প্রদক্ষিণ করে। এ সময় তারা শিক্ষার্থী ও পথচারীদের মাঝে মিষ্টি বিতরণ করেন। সেই সাথে শেখ হাসিনার ফাঁসির আদেশ গণঅভ্যুত্থানের পর আরেকটি বিজয় বলে তারা আখ্যায়িত করেন এবং একে-অপরের সাথে কোলাকুলি করে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেন।
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড.শওকাত আলী বলেন, আগামীতে যারাই ক্ষমতায় আসবেন তারা এ দৃষ্টান্ত মনে রেখে কাজ করবেন।
এদিকে বিকেলে নগরীর টাউন হল থেকে জাতীয় ছাত্র শক্তি মহানগর কমিটির উদ্যোগে একটি মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এছাড়া প্রেসক্লাব চত্ত্বরে অটো চালক ও পথচারীদের মিষ্টি খাইয়ে দেন জুলাইযোদ্ধা সীমান্ত হোসেন।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল