বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার কোলগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়ে জরাজীর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান। ৮৩ বছরের পুরাতন এই বিদ্যালয়ে ঝুঁকি নিয়েই চলছে শিক্ষা কার্যক্রম। স্কুলের এমন জরাজীর্ণতার কারণে কক্ষ ছেড়ে পাশেই টিনের ছাউনী বিশিষ্ট ভবনে ক্লাস করছে শিক্ষার্থীরা। সেই সাথে খেলার মাঠ, শৌচাগার, লাইব্রেরীসহ প্রয়োজনীয় ব্রেঞ্চ সংকটের কারনে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সিমাহীন দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এসব সমস্যা সমাধানে তারা দ্রুত নতুন ভবন নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষের কাছে।
জানা গেছে, স্থানীয় শিক্ষানুরাগী শরিফ উদ্দিনের ঐকান্তিক প্রচেষ্ঠায় ১৯৪১ সালে প্রায় ১ একর ১৮ শতক জায়গার উপর চামরুল ইউনিয়নে কোলগ্রাম উচ্চ বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। ১৯৬৫ সালে বিদ্যালয়টি নিম্ন মাধ্যমিক মঞ্জুরী লাভ করে। ১৯৬৯ সালে উচ্চ বিদ্যালয়ে মঞ্জুরীপ্রাপ্ত হয়। ১৯৯৫ সালের পহেলা জুন বিদ্যালয়টি এমপিও ভুক্ত হয়। শুরুতেই বিদ্যালয়টি মেডইন ইংলিশ হিসেবে যাত্রা শুরু করে। সে সময় ভারতের জলপাইগুড়ি বিভাগের আওতায় বিদ্যালয়টি পরিচালিত হয়। তৎকালীন সময় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেছিলেন। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে ৩টি ভবন রয়েছে। টিনের ছাউনির একটি পাকা ৩কক্ষের ভবনসহ পুরাতন টিনের ছাউনী বিশিষ্ট ভবনে পাঠদান চলছে। পুরাতন এই ভবনে টিনের ছাউনি ফুটা হয়ে গেছে।
একটু বৃষ্টি নামলেই শ্রেণীকক্ষে পানি পরে। এসময় ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদান থেকে বিরত থাকতে হয়। এছাড়া ১৯৯৭ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর থেকে নির্মিত ২ কক্ষ বিশিষ্ট পাকা ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় তা পরিত্যক্ত অবস্থায় রয়েছে। পাকা এই ভবনটি দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় বিভিন্ন স্থানের প্লাষ্টার উঠে গেছে। ছাদের প্লাষ্টারগুলো উঠে রডগুলো কংকালের মত বেরিয়ে রয়েছে। দরজা জানালার অবস্থাও করুন। ফলে ২০১৬ সালে এই ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ১৫০জন। শিক্ষক রয়েছেন ১৩ জন। আর চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী রয়েছেন ৪ জন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফেরাজ উদ্দিন মিঞা জানান, উপজেলায় অনেক নতুন নতুন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ৪তলা বিশিষ্ট ভবন পেলেও দুর্ভাগ্যবশত প্রায় ৮৩ বছরের পুরাতন এই বিদ্যালয়ে কোন ভবন বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতায় ২ কক্ষ বিশিষ্ট একটি পাকা ভবন নির্মাণ করা হলেও প্রয়োজনীয় সংস্কারের অভাবে তা পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, জেএসসি এবং এসএসসি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের পাশের ধারা অব্যাহত রাখতে নিয়মিত ক্লাস নেওয়া হচ্ছে।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি আবু জাফর জানান, দীর্ঘ দিনের পুরাতন এই বিদ্যালয়টিতে সরকারি ভাবে উন্নয়নের কোনো ছোঁয়া লাগেনি। ৪তলা বিশিষ্ট পাকা একটি ভবনের জন্য বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন দিলেও ব্যর্থ হয়েছেন।
তিনি বলেন, বিদ্যালয়ে লেখাপড়ার সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষার্থে দ্রুত ৪তলা পাকা ভবন নির্মাণ করা জরুরি। এজন্য তিনি শিক্ষা বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল