লাদাখের কৌশলগতভাবে অত্যন্ত সংবেদনশীল এলাকায় নির্মিত বিমানঘাঁটিতে ভারত প্রথমবার সামরিক পরিবহন বিমানের অবতরণ করিয়েছে। ভারতীয় বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল এ. পি. সিং নিজেই সি-১৩০জে সুপার হারকিউলিস বিমানটি নিয়ে সেখানে নামেন।
প্রায় ১৩ হাজার ফুট (৪,০০০ মিটার) উচ্চতায় অবস্থিত মুথ-ন্যোমা এয়ারফোর্স স্টেশন এখন যুদ্ধবিমান পরিচালনার সক্ষমতাও অর্জন করেছে বলে ভারতের এক কর্মকর্তা জানান। সংবেদনশীলতার কারণে তিনি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক। ভারতীয় বিমানবাহিনী বা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি।
নতুন এই বিমানঘাঁটি লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল (এলএসি) থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এটি লাদাখ অঞ্চলে ভারতের দ্রুত প্রতিক্রিয়া সক্ষমতা বাড়াবে বলে দাবি করছে দিল্লি। এটি ওই অঞ্চলে ভারতের তৃতীয় বড় এয়ারস্টেশন।
অবসরপ্রাপ্ত এয়ার মার্শাল সঞ্জীব কাপুর এক্স-এ লিখেছেন, নতুন এয়ারফিল্ডটি ভারতের উভয় প্রতিপক্ষের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে। তিনি উল্লেখ করেন, সীমান্তের ওপারে চীনও একই উচ্চতায় একটি এয়ারফিল্ড পরিচালনা করছে।
যদিও ২০২৪ সালের ঐতিহাসিক সামরিক উত্তেজনা-হ্রাস চুক্তির পর থেকে ভারত-চীন সম্পর্ক কিছুটা উষ্ণতার দিকে। চলতি বছর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির চীন সফর তা আরও এগিয়ে নিয়েছে, তবুও দুই দেশের মধ্যে গভীর অবিশ্বাস এখনো রয়ে গেছে। ভারতের সেনাপ্রধান সম্প্রতি জানিয়েছেন, সীমান্তজুড়ে উভয় পক্ষই সৈন্য সমাবেশ ও অবকাঠামো সম্প্রসারণ অব্যাহত রেখেছে।
দুই দেশের মধ্যে ৩,৮০০ কিলোমিটার দীর্ঘ অচিহ্নিত সীমান্ত ১৯৫০-এর দশক থেকেই বিরোধের কেন্দ্রবিন্দু। ১৯৬২ সালে অনুষ্ঠিত সংক্ষিপ্ত কিন্তু তীব্র যুদ্ধ এবং ২০২০ সালের প্রাণঘাতী সংঘর্ষ এই উত্তেজনাকে আরও তীব্র করেছিল। তবে ২০২৪ সালের চুক্তির পর ধীরে ধীরে সীমিত ভ্রমণ ও সরকারি পর্যায়ের যোগাযোগ পুনরায় চালু হওয়ায় সম্পর্ক কিছুটা স্বাভাবিকের পথে ফিরছে।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল