অবৈধ অভিবাসন যুক্তরাজ্যকে ছিন্নভিন্ন করে দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী শাবানা মাহমুদ। সংসদে আশ্রয় (অ্যাসাইলাম) নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে তিনি প্রস্তাব উত্থাপন করবেন। তার আগেই বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ কথা জানান।
নতুন নীতিতে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হচ্ছে, যারা যুক্তরাজ্যে আশ্রয় পাবেন, তাদের স্থায়ী বসবাসের আবেদন করতে ২০ বছর অপেক্ষা করতে হবে। বর্তমানে এই সময়সীমা মাত্র ৫ বছর।
এছাড়া আশ্রয়প্রাপ্তদের প্রতি আড়াই বছর অন্তর তাদের স্ট্যাটাস পুনর্মূল্যায়ন করা হবে। যদি কোনো শরণার্থীর নিজ দেশ নিরাপদ হিসেবে বিবেচিত হয়, তাহলে তাকে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবে।
মাহমুদ বলেন, অবৈধ পথে আগতদের কারণে ব্রিটিশ সমাজে গভীর বিভাজন তৈরি হয়েছে এবং আইন ভঙ্গকারীরা সুবিধা নিতে পারছে; এই অবস্থা আর চলতে দেওয়া যায় না। তার মতে, এটা কেবল নীতির বিষয় নয়, নৈতিক দায়িত্বও।
শাবানার পরিকল্পনায় ডেনমার্কের কঠোর অভিবাসন নীতির ছাপ স্পষ্ট। ডেনমার্কে আশ্রয়প্রার্থীদের সাধারণত অস্থায়ী দুই বছরের পারমিট দেওয়া হয় এবং মেয়াদ শেষ হলে পুনরায় আবেদন করতে হয়। ডেনিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রী লার্স লোক্কে রাসমুসেন বিবিসিকে বলেন, এই নীতির উদ্দেশ্য মানবপাচারকারীদের কাছে বার্তা পৌঁছানো, ডেনমার্ক কোনো সহজ গন্তব্য নয়।
তবে লেবার পার্টির ভেতর থেকেই সমালোচনা উঠেছে। এমপি ক্লাইভ লিউইস বলেন, এই নীতিতে অতি-ডানপন্থার বক্তব্যের প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে এবং এতে অনেক বামঘরানার ভোটার গ্রিন পার্টির দিকে ঝুঁকতে পারেন। তবে মাহমুদ এসব অভিযোগ নাকচ করে বলেন, তিনি নিজেই অভিবাসী পরিবারের সন্তান এবং অভিবাসন তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
অন্যদিকে কনজারভেটিভ পার্টির শ্যাডো হোম সেক্রেটারি ক্রিস ফিলিপ এই পরিকল্পনাকে গিমিক”ল আখ্যা দিয়ে বলেন, তাদের সরকার হলে অবৈধভাবে প্রবেশকারীদের এক সপ্তাহের মধ্যেই বহিষ্কার করা হবে এবং যুক্তরাজ্যকে ইউরোপিয়ান কনভেনশন অন হিউম্যান রাইটস থেকে বের করে আনা হবে।
লিবারেল ডেমোক্র্যাট নেতা স্যার এড ডেভি জানান, তারা বিস্তারিত পরিকল্পনা দেখবে, তবে তার মতে আশ্রয়প্রার্থীদের কাজের সুযোগ দিলে সরকারি সহায়তার প্রয়োজন কমে যাবে এবং অর্থনীতিও লাভবান হবে।
সূত্র: বিবিসি
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল