যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন নীতিতে বড় পরিবর্তন আনার প্রস্তুতি নিচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন। দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত নথি অনুসারে, ট্রাভেল ব্যান বা ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার তালিকাভুক্ত দেশগুলোর নাগরিকদের গ্রিন কার্ড ও অন্যান্য অভিবাসন সুবিধা পাওয়া আরও কঠিন হয়ে যেতে পারে।
ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটির (ডিএইচএস) খসড়া নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ট্রাভেল ব্যান থাকা দেশগুলোর বিশেষ ঝুঁকি অভিবাসন সিদ্ধান্তে স্বয়ংক্রিয় নেতিবাচক হিসেবে গণ্য করা হবে।
গ্রিন কার্ড, আশ্রয়, প্যারোল এবং কিছু অন্যান্য সুবিধার ক্ষেত্রেই এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে। তবে নাগরিকত্বের আবেদন এর বাইরে থাকবে।
এখন পর্যন্ত মার্কিন কর্মকর্তারা কমিউনিটির সঙ্গে সম্পর্ক, অপরাধের ইতিহাস, মানবিক পরিস্থিতি ইত্যাদি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেন। নতুন নীতিতে মূল ফোকাস দেওয়া হচ্ছে আবেদনকারীর জাতীয়তার ঝুঁকি মূল্যায়নে।
বাইডেন প্রশাসনের সাবেক কর্মকর্তা ডাগ র্যান্ড এই উদ্যোগকে অভূতপূর্ব পরিবর্তন বলে উল্লেখ করে বলেন,
এটি যুক্তরাষ্ট্রে থাকা মানুষদের দীর্ঘদিনের স্থিতিশীল প্রত্যাশা নষ্ট করার চেষ্টা।
অন্যদিকে সাবেক কর্মকর্তা মাইকেল ভালভার্দে মন্তব্য করেছেন, আবেদনকারীরা এই নেতিবাচক ফ্যাক্টর কাটিয়ে উঠতে পারবেন কিনা, সেটাই এখন দেখার বিষয়। না পারলে এটি কার্যত সেই দেশগুলোর জন্য নতুন নিষেধাজ্ঞাই হয়ে দাঁড়াবে।
১২ দেশের ওপর সম্পূর্ণ ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। জুন মাসের ট্রাভেল ব্যান অনুযায়ী নিম্নলিখিত দেশগুলোর নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ:
আফগানিস্তান
মিয়ানমার
চাদ
কঙ্গো রিপাবলিক
ইকুয়েটোরিয়াল গিনি
এরিত্রিয়া
হাইতি
ইরান
লিবিয়া
সোমালিয়া
সুদান
ইয়েমেন
৭ দেশের ওপর রয়েছে আংশিক নিষেধাজ্ঞা। এই দেশগুলোর নাগরিকরা স্থায়ীভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করতে পারবেন না, পাশাপাশি পর্যটন ও ছাত্র ভিসাও পাবেন না।
বুরুন্ডি
কিউবা
লাওস
সিয়েরা লিওন
টোগো
তুর্কমেনিস্তান
ভেনিজুয়েলা
যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, বেশ কিছু দেশ পর্যাপ্ত নিরাপত্তা-তথ্য সরবরাহ করে না, তাদের পাসপোর্ট নিরাপত্তা দুর্বল, পরিচয় যাচাইয়ের জন্য নির্ভরযোগ্য নথি যুক্তরাষ্ট্রকে দিতে পারে না।
সমালোচকদের মতে, এসব দুর্বলতা সংশ্লিষ্ট দেশের সরকারের; অথচ শাস্তি পাচ্ছেন সাধারণ নাগরিকরা।
আগের যে ছাড়গুলো ছিল
পুরোনো ট্রাভেলমব্যানের অধীনে কিছু ছাড় ছিল, যেমন—
বিদ্যমান ভিসাধারী, গ্রিন কার্ডধারী, ২০২৬ বিশ্বকাপ বা ২০২৮ অলিম্পিকের অ্যাথলেট, আফগান বিশেষ অভিবাসী ভিসাধারী, মার্কিন সরকারি কর্মচারী, ইরানের নির্যাতিত সংখ্যালঘু, জাতীয় স্বার্থের ভিত্তিতে বিশেষ ওয়েভারপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা।
সূত্র: এনডিটিভি
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল