যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ও শক্তিশালী দেশ হিসেবে পরিচিত। তবে সেই দেশেই প্রতি রাতে লাখ লাখ মানুষ ঘুমাতে যায় খালি পেটে। সাম্প্রতিক তথ্য ও বিশেষজ্ঞ বিশ্লেষণ বলছে, দেশটিতে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা এখন এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে যা আর উপেক্ষা করার মতো নয়।
সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ৩১ অক্টোবর ‘এক্স’-এ দেওয়া এক পোস্টে বিষয়টি আবারও আলোচনায় আনেন। তিনি লিখেন, ৪ কোটি ৭০ লাখ আমেরিকান, যার মধ্যে প্রতি পাঁচ শিশুর একজন, নির্ভরযোগ্য ও পুষ্টিকর খাবারের নাগাল পাচ্ছে না। তিনি সতর্ক করেন, খাদ্য সহায়তা কর্মসূচি শক্তিশালী না হলে ছুটির মৌসুমে মিলিয়ন মানুষ ক্ষুধার মুখে পড়বে।
সরকারি হিসেবে ২০২৪ সালে প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ পরিবার খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে ছিল, যা মোট মার্কিন পরিবারের ১৩.৫ শতাংশ। এদের মধ্যে ৬.৮ মিলিয়ন পরিবারকে ‘খুব নিম্ন খাদ্য নিরাপত্তা’ পর্যায়ে ধরা হয়।যেখানে পরিবারের সদস্যরা কম খেতে বা কোনো কোনো সময় খাবার না খেয়ে থাকতে হয়। মোট হিসেবে ৪ কোটি ৭০ লাখ মানুষ, যার মধ্যে প্রায় ১ কোটি ৩৮ লাখ শিশু, সারা বছর পর্যাপ্ত খাবার সংগ্রহে সংগ্রাম করেছে।
২০২৫ সালের প্রাথমিক জরিপে পরিস্থিতির উন্নতি নয় বরং অবনতি দেখা যাচ্ছে। কৃষ্ণাঙ্গ প্রাপ্তবয়স্কদের ৩৮ শতাংশ, হিস্পানিকদের ৩৪ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধী প্রাপ্তবয়স্কদের ৫২ শতাংশ জানান, তাঁরা খাবার কেনা বা পর্যাপ্ত খাবার জোগাড় করতে পারছেন না। দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা পরিবারগুলোতে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা ৩৮ শতাংশ ছাড়িয়েছে।
খাদ্য মূল্যের তীব্র বৃদ্ধি সংকটকে আরও গভীর করেছে। ২০১৯ থেকে ২০২৫ পর্যন্ত খাবারের দাম বেড়েছে প্রায় ২৮ শতাংশ। শুধু ২০২৪ সালেই খাদ্য মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে ৫.৮ শতাংশ। ফলে যে পরিবার মাসে ২০০ ডলার খরচ করত, এখন একই পণ্য কিনতে ব্যয় করছে প্রায় ২৫০ ডলার। কম আয়ের পরিবারের জন্য এই অতিরিক্ত ব্যয় মানে খাবার বাদ দেওয়া, বা সস্তা ও কম পুষ্টিকর খাদ্য বেছে নেওয়া।
সূত্র: প্রেস টিভি
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল