যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইউসি–আর্বাইন) জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর খুব কাছাকাছি এক নতুন গ্রহের সন্ধান পেয়েছেন। গ্রহটি তার নক্ষত্রের ‘হ্যাবিটেবল জোন’–এ (যেখানে পানির অস্তিত্ব থাকার মতো উপযুক্ত তাপমাত্রা থাকে) ঘুরছে। পানিই জীবনের মূল ভিত্তি, তাই এ আবিষ্কারকে গুরুত্ব দিচ্ছেন গবেষকেরা।
নতুন পাওয়া এ গ্রহের নাম জি–জে ২৫১ সি (GJ 251 c)। এটি আকারে পৃথিবীর মতো হলেও ওজনে বেশি। তাই একে ‘সুপার–পৃথিবী’ বলা হচ্ছে। গ্রহটি মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির একটি খুব কাছের অংশে অবস্থিত, মাত্র ১৮ আলোকবর্ষ দূরে।
বিজ্ঞানীদের ভাষায়, এ দূরত্ব ‘মহাজাগতিক হিসেবে প্রায় পাশের বাড়ি’। গ্রহটি একটি এম–ডোয়ার্ফ নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে ঘুরছে। এ ধরনের নক্ষত্র মিল্কিওয়েতে সবচেয়ে বেশি দেখা যায় এবং দীর্ঘায়ু। তবে এগুলোতে তারকালোকের দাগ ও আকস্মিক বিস্ফোরণ প্রায়ই ঘটে। এগুলোর আলো পরিবর্তন অনেক সময়ে গ্রহ শনাক্তের সংকেতের সঙ্গে মিলে যায়, ফলে আসল সংকেত আলাদা করা কঠিন হয়।
তবু উন্নত যন্ত্রের সাহায্যে জি–জে ২৫১ সি–কে শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। হ্যাবিটেবল–জোন প্ল্যানেট ফাইন্ডার (HPF) ও NEID যন্ত্রে নক্ষত্রের আলোতে খুব সামান্য নিয়মিত পরিবর্তন ধরা পড়ে। কোনো গ্রহ তার নক্ষত্রকে টানলে এ ধরনের পরিবর্তন দেখা যায়—এ পরিবর্তনকে বলে রেডিয়াল ভেলোসিটি সিগনেচার (তারার আলোর সূক্ষ্ম দোলন)। এই সংকেত থেকেই গ্রহটির অস্তিত্ব নিশ্চিত হয়।
গবেষকেরা জানান, গ্রহটি পৃথিবীর এত কাছে হওয়ায় ভবিষ্যতে সরাসরি ছবি তোলা সম্ভব হতে পারে। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের থার্টি মিটার টেলিস্কোপ (TMT) চালু হলে এমন ক্ষীণ গ্রহের স্পষ্ট ছবি পাওয়া যাবে এবং পানির অস্তিত্ব আছে কি না—তা যাচাই করা যাবে।
গবেষণার প্রধান লেখক কোরি বিয়ার্ড বলেন, বর্তমান তথ্য বেশ শক্তিশালী হলেও চূড়ান্ত নিশ্চিত হতে হলে সরাসরি ছবি প্রয়োজন। গবেষকেরা আশা করছেন, ভবিষ্যতের উন্নত টেলিস্কোপ এ গ্রহ সম্পর্কে আরও নির্ভুল তথ্য দেবে এবং নতুন গবেষণার পথ খুলে দেবে।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল