কংগ্রেস নেতা শশী থারুর আবারও আলোচনায়। মঙ্গলবার ফের তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রশংসা করে নিজ দলে বিতর্কের মুখে পড়েছেন। এই ঘটনায় কংগ্রেসের অন্যান্য নেতাদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। শশী থারুর এর আগেও কয়েকবার মোদির গুণগান করেছেন। তার এমন কাণ্ডকে কংগ্রেসের অনেক নেতাই ভালোভাবে নেননি।
তিরুবনন্তপুরমের সংসদ সদস্য শশী থারুর এক্স পোস্টে জানান, তিনি দিল্লিতে একটি ব্যক্তিগত অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন, যেখানে মোদি ভারতের উন্নয়নের জন্য গঠনমূলক অধৈর্য নিয়ে বক্তব্য রাখেন এবং ঔপনিবেশিকতামুক্ত মানসিকতাকে জোরালোভাবে তুলে ধরেন।
মোদি বলেন, ভারত এখন কেবল একটি উন্নয়নশীল বাজার নয় বরং বিশ্বের জন্য একটি উন্নয়নশীল মডেল। তিনি বলেন, মহামারী বা ইউক্রেন সংঘাতের মতো বিশ্বব্যাপী ঘটনা সত্ত্বেও ভারতের অর্থনৈতিক স্থিতিস্থাপকতা বিশ্ব লক্ষ্য করেছে। থারুর মোদিকে উদ্ধৃত করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেছেন যে তার বিরুদ্ধে সব সময় ‘নির্বাচনী মোডে’ থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে... কিন্তু তিনি আসলে মানুষের সমস্যা সমাধানের জন্য আবেগপূর্ণ মোডে থাকেন।
থারুর আরও জানান, মোদির ভাষণের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল ম্যাকোলের ২০০ বছরের দাসত্বের মানসিকতার (অর্থাৎ ঔপনিবেশিক মানসিকতার) উত্তরাধিকারকে উল্টে দেওয়ার বিষয়ে। মোদি দেশের ঐতিহ্য, ভাষা এবং জ্ঞান ব্যবস্থার প্রতি গর্ব পুনরুদ্ধারের জন্য একটি ১০-বছরের জাতীয় মিশনের আবেদন জানান বলে তিনি উল্লেখ করেন।
থারুর উপসংহারে বলেন, মোটকথা, এই ভাষণটি অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং সাংস্কৃতিক কাজের ডাক, জাতিকে উৎসাহিত করেছে। শ্রোতাদের মধ্যে থাকতে পেরে খুশি...।
অনুষ্ঠানের ছবিতে দেখা যায় থারুর তার বাম দিকে বিজেপি নেতা এবং সাবেক আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদের সাথে এবং ডান দিকে প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা গুলাম নবী আজাদের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে বসে আছেন।
প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে থমাস ব্যাবিংটন ম্যাকোলেকে ইঙ্গিত করছিলেন, যিনি ছিলেন ১৯ শতকের একজন ব্রিটিশ সাংসদ। ম্যাকোলে ১৮৩৪ সালে ভারতে আসেন এবং তাঁকে ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা ব্যবস্থার প্রবর্তন এবং ইংরেজিকে সমস্ত বিদ্যালয়ে শিক্ষার আনুষ্ঠানিক ভাষা করার কৃতিত্ব দেওয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রীর এই প্রশংসার জন্য শশী থারুরের প্রতি অন্যান্য কংগ্রেস নেতাদের মনোভাব অনুকূল হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে। গত কয়েক মাসে চারবারের এই এমপি এবং কংগ্রেসের মধ্যে সম্পর্ক বেশ খারাপ হয়েছে। বিশেষত যখন ২২ এপ্রিল পেলহেগাম হামলার পরে বন্ধুত্বপূর্ণ দেশগুলিতে পাঠানো সরকারি প্রতিনিধি দলের বিরোধী মুখগুলির মধ্যে তাকে বেছে নেওয়া হয়েছিল।
থারুর যুক্তরাষ্ট্রসহ চারটি দেশে প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন এবং দেশে ফিরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার আলোচনা দলবদলের গুজবকে আরও বাড়িয়ে দেয়। সেসময়ও তিনি মোদির প্রশংসা করেন্য।
তবে, থারুর স্পষ্ট করেছেন যে তিনি বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন না। জুনে তিনি বলেছিলেন, এটা (প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা) আমার তার দলে যোগ দেওয়ার লক্ষণ নয়... যেমনটা দুর্ভাগ্যবশত কিছু লোক ইঙ্গিত করছেন। এটি জাতীয় ঐক্যের একটি বিবৃতি...।
সূত্র: এনডিটিভি
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল