জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে সংসদ নির্বাচন, পিআর পদ্ধতিতে (সংখ্যানুপাতিক হারে সংসদে প্রতিনিধিত্ব) নির্বাচন আয়োজনসহ পাঁচ দাবিতে দ্বিতীয় ধাপে ১১ দিনের অভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। এদিকে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপাও কিছুটা অভিন্ন সাত দফা দাবিতে ১১ দিনের একই কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। ২ থেকে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত ৯ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে নেজামে ইসলাম পার্টি। অভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- ১ অক্টোবর (আজ) থেকে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত পাঁচ দফা দাবির পক্ষে জনমত গঠনের লক্ষ্যে গণসংযোগ। ১০ অক্টোবর ঢাকায় ও বিভাগীয় শহরে গণমিছিল এবং ১২ অক্টোবর জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান।
গতকাল পৃথক সংবাদ সম্মেলন ও বিবৃতিতের মাধ্যমে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। দলগুলো সর্বস্তরের নেতা-কর্মী এবং দেশবাসীকে ঘোষিত কর্মসূচি বাস্তবায়ন করার আহ্বান জানিয়েছে। এর আগেও প্রথম ধাপে তিন দিনের কর্মসূচি পালন করেছে জামায়াতসহ ৭টি রাজনৈতিক দল। অভিন্ন পাঁচ দফা দাবি হলো- জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজন করা। পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন আয়োজন করা। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা। গণহত্যার বিচার দৃশ্যমান করা। বিশেষ ট্রাইব্যুনালে ভারতীয় তাঁবেদার ও ফ্যাসিবাদের দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের বিচার করা এবং তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, আমাদের পাঁচ দফা গণদাবি ইতোমধ্যে জনগণের কাছে যৌক্তিক ও গ্রহণযোগ্য হয়েছে। বর্তমান সরকারের উচিত অবিলম্বে জনগণের পাঁচ দফা দাবি মেনে নিয়ে জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করা।
এদিকে সংবাদ সম্মেলনে ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমাদ বলেন, ৭টি রাজনৈতিক দল ধারাবাহিক কর্মসূচি পালন করার পরও সরকারের পক্ষ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। জুলাই সনদের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে এখনো ঐকমত্য হয়নি। যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে সেগুলোর আইনি ভিত্তি নিয়ে টানাপোড়েন এখনো শেষ হয়নি।
যৌথ বিবৃতিতে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক ও মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ বলেন, জুলাই সনদের বাস্তবায়নে অনিশ্চয়তায় দেশ আজ ভয়াবহ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটে নিমজ্জিত। জনগণের ন্যায্য দাবি উপেক্ষা করে পুরোনো স্বৈরতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা চাপিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। ইসলামি শক্তিকে দমিয়ে রাখার জন্য পরিকল্পিতভাবে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে এবং জাতীয় স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে বিদেশি প্রভুদের খুশি করার নীতি গ্রহণ করা হচ্ছে। জনগণের ইমানি চেতনা ও জুলাই বিপ্লবের গণ আকাক্সক্ষাকে পদদলিত করার যে কোনো ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করা হবে।
জাগপা সহসভাপতি ও দলীয় মুখপাত্র রাশেদ প্রধান বলেন, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি এবং শেখ হাসিনার বিচার দেখার জন্য দেশের মানুষ মুখিয়ে আছে। আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টির অপরাজনীতি জনগণ আর দেখতে চায় না।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নেজামে ইসলাম পার্টির আমির আল্লামা সরওয়ার কামাল আজিজি ও মহাসচিব মাওলানা মুসা বিন ইযহার বলেন, জুলাই অভ্যুথানের প্রকৃত উদ্দেশ্য অর্জনের এখনো অনেক কাজ বাকি। পাঁচ দফা দাবি দ্রুত বাস্তবায়নের কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান তিনি।