রাজশাহীর পবা উপজেলার বামনশিকড় এলাকায় একই পরিবারের চারজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল সকালে নিজ বাড়ি থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশের পাশে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। চিরকুটে লেখা ছিল, ‘মরে গেলাম ঋণের দায়ে আর খাওয়ার অভাবে।’ মৃত ব্যক্তিরা হলেন মিনারুল ইসলাম (৩৫), তাঁর স্ত্রী মনিরা বেগম (২৮), ছেলে মাহিন (১৩) ও মেয়ে মিথিলা (২)। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মিনারুল ইসলাম কৃষিকাজ করতেন। তিনি অনেকের কাছে ঋণী ছিলেন। তাঁদের বসতবাড়ির একটি ঘর থেকে স্ত্রী ও মেয়ের, অন্য ঘর থেকে মিনারুল ও তাঁর ছেলের লাশ পাওয়া গেছে। রাজশাহীর পুলিশ কমিশনার আবু সুফিয়ান জানান, ‘লাশের পাশে হাতে লেখা একটা চিঠি পাওয়া গেছে। প্রাথমিক ধারণা এটা মিনারুলের লেখা। এতে ঋণের কথা বলা হয়েছে। ঋণ নাকি অন্য কোনো কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’ মিনারুলের চাচি জানান, মিনারুল একসময় জুয়ায় আসক্ত ছিল। তখন ঋণগ্রস্ত হয়। দেড় বছর আগে জমি বেচে ঋণের কিছু টাকা পরিশোধ করে দেন ওর বাবা। সব টাকা শোধ না করায় বাবার ওপর ক্ষোভ ছিল তার। এ নিয়ে বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলত না মিনারুল। তবে ওর দুই সন্তানের সঙ্গে দাদা-দাদির ভালো সম্পর্ক ছিল।
তিনি আরও জানান, সকালে ওর বাবা রুস্তম আলী হাট থেকে একটি মাছ কিনে আনেন। তিনি স্ত্রীকে বলেন মিথিলাকে (নাতনি) ডাকতে। মিথিলাকে অনেক ডাকাডাকি করলেও সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল না। তখন তিনি পাশের ঘরে দেখেন মিনারুল ঝুলন্ত অবস্থায় আছে। তাঁর চিৎকারে প্রতিবেশীরা এসে থানায় খবর দেন। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। প্রতিবেশীরা জানান, সপ্তাহে ২ হাজার ৭৪০ টাকা কিস্তি ছিল মিনারুলের। একজনের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে অন্যজনকে শোধ করতেন। এভাবে ঋণে জড়িয়ে ছিলেন। ঘটনার পর মহানগর পুলিশের পাশাপাশি সিআইডি, পিবিআই তদন্তে নেমেছে। তারা ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছে।