ফিলিস্তিনের গাজায় ত্রাণসামগ্রী নিয়ে যাত্রা করা গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার নৌবহরের অন্তত ১৩টি জাহাজ আটক করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। পাশাপাশি ওই নৌবহর থেকে সুইডেনের জলবায়ুকর্মী গ্রেটা থুনবার্গসহ একাধিক অধিকারকর্মীকেও আটক করেছে তারা।
ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, একটি নৌযানের ডেকের ওপর বহরের সবচেয়ে বিশিষ্ট যাত্রী সুইডিশ জলবায়ুকর্মী গ্রেটা থুনবার্গসহ কয়েকজন অধিকারকর্মী বসে আছেন। তাদের ঘিরে ধরে রেখেছে ইসরায়েলি সেনারা।
ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, গাজাগামী ত্রাণ বহনকারী একটি জাহাজে অনুপ্রবেশ করে সেটিকে ইসরায়েলি বন্দরে নিয়ে গেছে তাদের সেনারা।
ফ্লোটিলার এই নৌবহরকে হামাস সংশ্লিষ্ট দাবি করে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ফ্লোটিলার কয়েকটি নৌযানকে থামানো হয়েছে। নৌযানের সবাই নিরাপদে আছে। গ্রেটা থুনবার্গ এবং তার বন্ধুরা নিরাপদ ও সুস্থ আছেন।
দখলদার ইসরায়েলের কঠোর অবরোধের ফলে ফিলিস্তিনের যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা উপত্যকায় ভয়াবহ মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে। খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও ওষুধের প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করে সেখানে এক ভয়ংকর মানবিক বিপর্যয় তৈরি করেছে ইসরায়েল। এ পরিস্থিতিতে গাজার অবরোধ ভাঙতে এগিয়ে এসেছে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা নামের বৈশ্বিক ত্রাণবাহী নৌবহর।
এই ফ্লোটিলায় বিভিন্ন দেশের প্রায় ৪৬টি বেসামরিক নৌযান রয়েছে। এই মহৎ উদ্যোগে অংশ নিয়েছেন সুইডিশ জলবায়ু কর্মী গ্রেটা থুনবার্গসহ আইনজীবী, সংসদ সদস্য এবং কর্মী। ফ্লোটিলার আয়োজকদের এই মিশনের লক্ষ্য হলো ইসরাইলিদের গাজার ওপর চাপানো দীর্ঘদিনের অবরোধ ভেঙে দেওয়া। তবে, এই ত্রাণবাহী নৌবহরকে আটকে দিতে বার বার হামলা ও উসকানিমূলক আচরণ করছে ইসরাইল।
ফ্লোটিলার আয়োজকরা বলছেন, তারা আন্তর্জাতিক জলসীমায় আইনগতভাবেই চলছিল। কিন্তু সেখানেও হানা দেয় ইসরায়েলি সেনারা। এই হস্তক্ষেপকে ‘অপহরণ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন ফ্লোটিলার আয়োজকরা। তারা বলছেন, আমরা কোনো আইন ভাঙিনি। বরং অবৈধ হলো ইসরায়েলের গাজা অবরোধ ও জাতিগত নিধন।
এদিকে, গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় ত্রাণবাহী ফ্লোটিলায় ইসরাইলি হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে ইতালির রাজধানী রোম, আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনোস আইয়ার্স ও তুরস্কের ইস্তাম্বুলসহ আরও কয়েকটি শহরে বিক্ষোভ করেন সাধারণ নাগরিকরা।
সূত্র : রয়টার্স
বিডি প্রতিদিন/কেএ