কুমিল্লা নগরীতে যানজট এখন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানুষ দিনভর সড়কে ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকেন। সিটি করপোরেশন, জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের নানান নামের কমিটি হচ্ছে কিন্তু কোনো সুরাহা হচ্ছে না। এর মধ্যে বড় বাস চলাচল যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এর ফলে নগরীর কান্দিরপাড়, লাকসাম রোড, মনোহরপুর, নিউমার্কেট এলাকায় বাস প্রবেশে মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে। এতে দুর্ভোগে পড়ছেন নগরের ১০ লাখ বাসিন্দা। নগরীতে এখন বাস প্রবেশ যেন আতঙ্কের নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, কান্দিরপাড় পূবালী চত্বর, টাউনহলের সামনের অংশ, নিউ মার্কেট, লাকসাম রোড, পুলিশ লাইন সড়ক ও নজরুল এভিনিউ সড়কের পাশের ফুটপাত দখল হয়ে আছে। কিছু ভবনের পার্কিং না থাকায় সড়কে যানবাহন রাখা হচ্ছে। সিএনজি অটো রিকশা ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার স্ট্যান্ড তো রয়েছেই। দোকানের সামনে সড়কে ভাসমান দোকান বসানো হয়েছে। এসব কারণে এ এলাকায় সারা দিন যানজট লেগে থাকে। মাঝে মাঝে উচ্ছেদ হলেও তারা আবার বসে। একটি পক্ষ অবৈধ সুবিধা নিয়ে তাদের আবার বসাতে সাহায্য করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এদিকে সকালে ও দুপুরে এই দুর্ভোগ আরও বেড়ে যায়। এ সময়ে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বড় বাস প্রবেশ করে। বাস দেখলে সড়কে চলাচল করা মানুষের আতঙ্ক বাড়ে। কারণ এই যানজট ঘণ্টায়ও ছাড়ে না। বিশেষ করে এই যানজটের কারণে খুব প্রয়োজন না হলে কান্দিরপাড় এড়িয়ে চলেন নগরবাসী।
আলোকিত বজ্রপুরের সংগঠক রফিকুল ইসলাম সোহেল বলেন, কুমিল্লা নগরী অপরিকল্পিত ভাবে গড়ে উঠছে। সড়ক দখল হয়ে আছে। যে সড়কে রিকশা চলাই কষ্টকর সেখানে দিনের বেলায় বড় বাস প্রবেশ করানো অমানবিক।
কুমিল্লা কৃষি ও কারিগরি কলেজের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ আনিসুর রহমান আখন্দ বলেন, নগরীর ব্যস্ত এলাকায় বড় বাস প্রবেশ করানোর কোনো যুক্তি নেই। এগুলোকে নগরীর খালি এলাকায় রেখে যাত্রী নেওয়া যেতে পারে। বিশেষ করে কান্দিরপাড়ে বাস প্রবেশে অনুমতি দেওয়া যাবে না। সুশাসনের জন্য নাগরিক কুমিল্লা জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আলী আহসান টিটু বলেন, নগরীতে বড় বাস চলাচল বন্ধের বিষয়ে সিটি করপোরেশন, জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনকে ভূমিকা নিতে হবে। অল্প কিছু মানুষকে সুবিধা দিতে নগরবাসীকে কষ্ট দেওয়ার কোনো মানে হয় না।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনর নির্বাহী প্রকৌশলী আবু সায়েম ভুইয়া বলেন, নগরীতে বড় বাস প্রবেশে যানজট বাড়ছে। গত সোমবারের সভায় বড় বাস প্রবেশের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। প্রশাসক বাসের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তাদের সঙ্গে বসে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।