দিল্লির ঐতিহাসিক লালকেল্লার কাছে গাড়ি বোমা বিস্ফোরণে পর সারা ভারতে কাশ্মীরি শিক্ষার্থী ও পেশাজীবীরা পড়েছেন চরম বিপাকে। সন্দেহভাজন হিসেবে তাদের নানারকম হয়রানি করা হচ্ছে। বিস্ফোরণের ঘটনার পরপরই নিরাপত্তা বাহিনী কাশ্মীর, হরিয়ানা ও উত্তরপ্রদেশসহ বিভিন্ন রাজ্যে ব্যাপক তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে।
পুলিশ জানায়, অভিযুক্ত আততায়ী হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলার বাসিন্দা ২৯ বছর বয়সী চিকিৎসক উমর উন নাবিকে। কর্তৃপক্ষ হোয়াইট-কলার টেরর মডিউলের যোগসূত্রের দাবি করে একাধিক ছাত্র, চিকিৎসক ও পেশাজীবীর বাড়িতে অভিযান চালায়। এসব অভিযানের মধ্যে কিছু জায়গায় বাড়িঘর ভাঙচুর ও গ্রেপ্তারের ঘটনাও সামনে এসেছে।
দিল্লিতে পড়াশোনা করা কাশ্মীরি শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, প্রকাশ্য হয়রানির ঘটনা খুব বেশি না হলেও সার্বিক পরিবেশে ভয়, সন্দেহ ও একধরনের নিঃশব্দ চাপ স্পষ্ট। অনেকেই জানান, সাধারণ কথোপকথন এখন প্রায়ই রাজনৈতিক বা নিরাপত্তা প্রসঙ্গে গিয়ে ঠেকে, যেন তাদের পরিচয়ই হয়ে উঠেছে সন্দেহের বিষয়।
অভিযানের প্রভাবে কয়েকটি পরিবার চরম মানসিক চাপে পড়েছে। এক কাশ্মীরি ব্যবসায়ীর আত্মহত্যার ঘটনাও সামনে এসেছে। তিনি পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদের পর মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন বলে পরিবারের অভিযোগ।
মানবাধিকারকর্মী ও গবেষকদের অভিযোগ, বিস্ফোরণ-পরবর্তী এই তল্লাশি কার্যক্রম জাতিগত হয়রানিতে রূপ নিচ্ছে, বিশেষ করে কাশ্মীরিদের বিরুদ্ধে। সমালোচকরা বলছেন, ২০১৯ সালে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদা বাতিলের পর থেকেই নজরদারি, আটক, সম্পত্তি জব্দ এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতার উপর নিয়ন্ত্রণ বাড়ছে; এ বিস্ফোরণ সেই চাপ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।
কাশ্মীরি শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো ঘৃণাত্মক মন্তব্য ও ভিডিও তাদের নিরাপত্তাহীনতাকে আরও তীব্র করছে। তারা বলছেন, হয়রানি সরাসরি ঘটুক বা না ঘটুক, সেই আতঙ্ক প্রতিদিনই তাদের জীবনে প্রভাব ফেলছে।
সূত্র: টিআরটি
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল