রংপুর নগরী এখন মশা উৎপাদনের কারখানায় পরিণত হয়েছে। ঘরে বাইরে সবখানে মশার অত্যাচারে অতিষ্ঠ নগরবাসী। নগরীর কেন্দ্রস্থল দিয়ে বয়ে যাওয়া শ্যামাসুন্দরী ও কেডি খাল মশার আস্তানায় পরিণত হয়েছে। এতে ডেঙ্গুর শঙ্কায় দিন কাটছে শহরের মানুষের।
সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, নগরীর জিএল রায় রোড এবং মুলাটোল এলাকায় এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে। ফলে মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগ ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এডিস মশার অস্তিত্ব যেসব এলাকায় পাওয়া গেছে সেই সব এলাকায় জরুরি ভিত্তিতে ওষুধ স্প্রে করা হলেও তা কাজে আসছে না। ওষুধ স্প্রে করার ছয়টি মেশিন রয়েছে। এসব মেশিন একনাগাড়ে কয়েক ঘণ্টা চললে আর কাজ করে না। সিটি করপোরেশন জানিয়েছে, মশক নিধনে ১০ ড্রাম ওষুধ কেনার টেন্ডার করা হয়েছে। ওষুধ এলে মশকনিধন পুরোদমে শুরু হবে।
জানা গেছে, নগরীর জলাবদ্ধতা দূর করতে রংপুর পৌরসভার প্রথম চেয়ারম্যান ও ডিমলার রাজা জানকীবল্লভ সেন ১৮৯০ সালে তার মা চৌধুরানী শ্যামাসুন্দরী দেবীর নামে খালটি খনন করেন। এটি ঘাঘট নদী থেকে শুরু করে নগরীর ধাপ পাশারী পাড়া, কেরানীপাড়া, মুন্সিপাড়া, ইঞ্জিনিয়ারপাড়া, গোমস্তাপাড়া, সেনপাড়া, মুলাটোল, তেঁতুলতলা, নূরপুর, বৈরাগীপাড়া হয়ে মাহিগঞ্জের মরা ঘাঘটের সঙ্গে যুক্ত হয়।
দীর্ঘদিন থেকে সংস্কার না করায় খালটি নাব্য হারিয়ে ফেলেছে। এর দুই ধারে অবৈধভাবে দখল হয়ে যাওয়ায় সংকীর্ণ হয়ে পড়ে খালটি। সামান্য বৃষ্টিতেই গোটা শহরে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। শ্যামাসুন্দরী খালটি সংস্কার কাজ থমকে থাকায় মশা উৎপাদনের কারখানায় পরিণত হয়েছে। অন্যদিকে নগরীতে কেডি খাল নামে আরেকটি খাল রয়েছে। এই খালের প্রায় চার কিলোমিটার অংশ এক যুগেও পরিষ্কার করা হয়নি। ফলে মশা জন্ম নিচ্ছে। এমনটিই অভিযোগ করেছেন খাল-সংলগ্ন বাসিন্দারা। দিনে রাতে সব সময় মশার কামড়ে মশাবাহিত রোগবালাই ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। রংপুর সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপক মিজানুর রহমান জানান, ওষুধ কেনার জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। ওষুধ এলে মশার পরিমাণ কমে যাবে।