অল্প বয়সেই অভাবনীয় সাফল্য ধরা দিয়েছে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার কিশোরী মুমতাহিনা করিম মীমের কাছে। একটি দুটি নয়, যুক্তরাষ্ট্রের ২৬টি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পেয়েছেন অফার লেটার। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের হেনড্রিক্স কলেজ থেকে বিশ্ববিখ্যাত ‘হেইস মেমোরিয়াল স্কলারশিপ’ অর্জন করেছেন তিনি। এটি একটি ফুল-রাইড স্কলারশিপ। বিশ্বজুড়ে প্রতি বছর মাত্র চারজন শিক্ষার্থী এই স্কলারশিপের জন্য নির্বাচিত হন। এবার যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে থেকে একমাত্র সুযোগ পাওয়া শিক্ষার্থী মীম। মীমের কাছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ থেকে প্রস্তাবিত স্কলারশিপের মোট মূল্য প্রায় ৩৬ কোটি টাকা। তবে তিনি হেনড্রিক্স কলেজে কম্পিউটার সায়েন্স (ডুয়েল-ইঞ্জিনিয়ারিং) প্রোগ্রামে স্নাতক সম্পন্ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। জানা যায়, ৫ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রে রওনা দিয়েছেন মীম। চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার সরফভাটা বড়বাড়ির মেয়ে তিনি। তার বাবা ব্যবসায়ী আবদুল করিম চৌধুরী, মা ইয়াসমিন আকতার। মীম নগরীর অংকুর সোসাইটি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি এবং কাপাসগোলা মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। ছোটবেলায় বাবা-মায়ের সঙ্গে বিদেশ যাওয়ার পর থেকেই বিদেশে উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন দেখা শুরু করেন তিনি। নিজের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে তাকে। সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় নিজেই একটি ওয়েবসাইট তৈরি করেন। নবম শ্রেণিতে গড়ে তোলেন ৬৫ সদস্যের প্রোগ্রামিং ক্লাব। জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে পুরস্কার জিতেছেন তিনি। সবচেয়ে ব্যতিক্রমী কাজ করেন করোনা মহামারির সময়। ঘরে বসেই গড়ে তোলেন একটি মিনি রোবটিক্স ল্যাব। নির্মাণ করেন ‘কিবো’ নামে একটি রোবট যেটি খাবার পরিবেশন করতে পারে। প্রযুক্তিগত দক্ষতা বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন সহশিক্ষা কার্যক্রম ও সাক্ষাৎকারে অংশ নেন মীম। যাত্রাটা সহজ ছিল না; কিন্তু অদম্য ইচ্ছাশক্তি ছিল এই কিশোরীর। মুমতাহিনা করিম মীম বলেন, স্কুল শেষ করে যখন কলেজে গেলাম, তখন নতুন পরিবেশ, নতুন চাপ সব মিলিয়ে কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে গিয়েছিলাম। কিছুদিন পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে পারিনি, পরীক্ষার ফলাফলে তার প্রভাব পড়েছিল। কিন্তু আমি হাল ছাড়িনি। ধীরে ধীরে নিজেকে সামলে আবার স্বপ্নের পথে ফিরেছি। এরপর শুরু হলো যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করার যুদ্ধ। অনেকেই বলেছিল, ‘তোমার তো কোনো স্কলারশিপই হবে না। শুধু সময় নষ্ট করছ!’ আবার অনেকে আমেরিকায় উচ্চশিক্ষা নেওয়ার ব্যাপারটায় হেসে উড়িয়ে দিত। আমার স্যাট, আইইএলটিএস পরীক্ষা, রিকমেন্ডেশন লেটার প্রত্যেকটি ধাপ ছিল পরিশ্রমের পরীক্ষা। অবশেষে যখন অফার আসতে শুরু করল, তখন বুঝলাম, আমার পরিশ্রম বৃথা যায়নি। আমি ২০টিরও বেশি শীর্ষ মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অফার পেয়েছি। যার মধ্যে রয়েছে ইউনিভার্সিটি অব কলোরাডো, ফ্রাঙ্কলিন অ্যান্ড মার্শাল কলেজ, হোবার্ট অ্যান্ড উইলিয়াম স্মিথ কলেজ, ক্লেমসন ইউনিভার্সিটি ইত্যাদি। শেষে একদিন ই-মেইল পেলাম হেনড্রিক্স কলেজ থেকে, হ্যাস মেমোরিয়াল বৃত্তির ফাইনালিস্ট হিসেবে আমি নির্বাচিত হয়েছি, যা প্রতি বছর সারা বিশ্ব থেকে মাত্র চারজনকে দেওয়া হয়। ডাক পড়ে ইন্টারভিউয়ের। আমি বাংলাদেশের দ্বিতীয় ব্যক্তি যিনি এই সম্মানজনক স্কলারশিপ পেয়েছি। এই পুরো যাত্রায় আমি একটা জিনিস বুঝেছি, যত চ্যালেঞ্জই আসুক, যদি মনোবল দৃঢ় থাকে, পরিশ্রম করার মানসিকতা থাকে, তবে কোনো কিছুই অসম্ভব নয়।’
শিরোনাম
- বুড়িচংয়ে ৭৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ল্যাপটপ বিতরণ
- ফতুল্লায় ড্রামের ভেতর মিললো যুবকের মরদেহ
- চট্টগ্রাম বন্দর; তিন মাসে কনটেইনারে ১২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি
- ১২ দিনের ছুটি শেষে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে আজ
- কিভাবে নিরাপদে ইন্সটাগ্রাম স্টোরি ও রিলস সংরক্ষণ করবেন
- রাজধানী ঢাকায় আজ যেসব কর্মসূচি
- বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ: ধর্ম উপদেষ্টা
- মশায় ঢাকার দুই সিটির নাগরিকদের দুর্দশা চরমে
- সংস্কার হয়েছে, কিন্তু বৈষম্য আরও বেড়েছে : রেহমান সোবহান
- বিনিয়োগে ধস, অনিশ্চয়তায় থমকে গেছে বিদেশি পুঁজি
- উৎপাদন ব্যয় বাড়ায় বিনিয়োগে অনীহা, ঝিমিয়ে পড়েছে অর্থনীতি
- শনিবার থেকে গাজায় ২৩০ বার বিমান হামলা, নিহত ১১৮
- জনপ্রশাসনে সচিবের চেয়ারে বসতে চান না কেউ!
- মিয়ানমারে বৌদ্ধদের উৎসবে জান্তার বোমা হামলায় নিহত ৪০
- প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তুরস্কের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সৌজন্য সাক্ষাৎ
- আবরার ফাহাদের শাহাদত জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বড়ো প্রেরণা : তথ্য উপদেষ্টা
- ভারী বৃষ্টি, দিল্লি বিমানবন্দরে নামতে পারল না ১৫ ফ্লাইট
- প্রয়োজনীয় ওষুধের তালিকায় যুক্ত হচ্ছে মেডিকেল অক্সিজেন
- গ্রিসে অভিবাসী বহনকারী নৌকা ডুবে চারজনের প্রাণহানি
- ইউনেস্কো সাধারণ সম্মেলনের সভাপতি নির্বাচিত বাংলাদেশ
যুক্তরাষ্ট্রের ২৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ে পেয়েছেন পড়ার সুযোগ
অফার লেটারের বন্যা, এক শিক্ষার্থীর সাফল্যের গল্প
মীম পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের হেনড্রিক্স কলেজ থেকে বিশ্ববিখ্যাত ‘হেইস মেমোরিয়াল স্কলারশিপ’। প্রতি বছর মাত্র চারজন শিক্ষার্থী এই স্কলারশিপের জন্য নির্বাচিত হন। এবার যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে থেকে একমাত্র সুযোগ পাওয়া শিক্ষার্থী তিনি
ইমরান এমি, চট্টগ্রাম
প্রিন্ট ভার্সন

এই বিভাগের আরও খবর
সর্বশেষ খবর