ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের বর্বর আগ্রাসনের দুই বছর পূর্ণ হয়েছে গতকাল ৭ অক্টোবর। এ দুই বছরের আগ্রাসনে ইসরায়েলকে ৩০ বিলিয়ন ডলার অর্থসহায়তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন ইউনিভার্সিটির ওয়াটসন ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড পাবলিক অ্যাফেয়ার্সের ‘যুদ্ধব্যয় প্রকল্প’-এর তথ্যানুযায়ী, মার্কিনিদের করের অর্থ এভাবে ব্যয়ের ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে।
ওই প্রকল্পের তথ্যানুসারে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে চলতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দুই বছরে যুক্তরাষ্ট্র ২১.৭ বিলিয়ন ডলারের সমরাস্ত্র দিয়েছে ইসরায়েলকে। একই সময়ে আরও আনুমানিক ৯.৬৫ থেকে ১২.০৭ বিলিয়ন ডলার ব্যয় হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের ইয়েমেন, ইরানসহ আশপাশের দেশগুলোয় সামরিক অভিযান পরিচালনায়। অর্থাৎ ইসরায়েলিদের সন্তুষ্টির লক্ষ্যে দুই বছরে যুক্তরাষ্ট্র ওই অঞ্চলে ৩৩.৭৭ বিলিয়ন ডলারের মতো ব্যয় করেছে। এর বাইরে ওয়াশিংটন-তেল আবিবের মধ্যকার সামরিক সহযোগিতার বিদ্যমান চুক্তি অনুযায়ী প্রতি বছর যুদ্ধসরঞ্জাম সরবরাহ বাবদ একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থসহায়তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
যুদ্ধব্যয় প্রকল্পের অন্যতম পরিচালক, কুইন্স ইনস্টিটিউট ফর রেসপনসিবল স্ট্যাটক্র্যাফটের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো উইলিয়াম হার্টং গাজা পরিস্থিতি প্রসঙ্গে বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সময়ের চুক্তি অনুযায়ী ইসরায়েলকে প্রতি বছর সামরিক সহযোগিতা খাতে যুক্তরাষ্ট্রের তরফে ৩.৮ বিলিয়ন ডলার করে প্রদানের কথা। কিন্তু গাজায় ইসরায়েলের হামলার প্রথম বছরে তা বেড়ে ১৭.৯ বিলিয়ন ডলারে উঠেছে। তবে পরের বছর অর্থাৎ এ বছর তা আবার ৩.৮ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।’
এদিকে গাজা ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের স্ববিরোধী আচরণের গতিপ্রকৃতি এখন জনমত জরিপেও দৃশ্যমান হচ্ছে। গত সপ্তাহে প্রকাশিত ‘নিউইয়র্ক টাইমস/সিয়েনা’ পরিচালিত জরিপে মার্কিনিদের ৬৭% বলেছে, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের প্রতি মার্কিন প্রশাসনের সহানুভূতিশীল দৃষ্টিভঙ্গি দৃশ্যমান হয়েছে। জরিপে ৫১% মার্কিনি ইসরায়েলকে আর কোনো সামরিক ও ত্রাণসহায়তা না দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছে।