সিরাজগঞ্জে ডিবি পুলিশের হেফাজতে হত্যা মামলার সন্দেহভাজন এক আসামির মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ বলছে, হেফাজতে থাকা আসামির শ্বাসকষ্টজনিত কারণে মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে চিকিৎসক জানিয়েছেন, আসামির শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে।
শুক্রবার (২১ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। নিহত শাহাদত হোসেন মুকুল (৪৫) সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার কালিয়া হরিপুর গ্রামের খলিল হোসেনের ছেলে।
সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক হেমাদ্রি শেখর সাহা বলেন, সাদা পোশাকে একদল পুলিশ সদস্য বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে শাহাদতকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। ভর্তির সময় তার হাত ও পায়ে ক্ষতচিহ্ন দেখা গেছে। ক্ষত দেখে জানতে চাইলে পুলিশ সদস্যরা ঘটনাটিকে পাবলিক অ্যাসল্ট বলে দাবি করেন।
ভর্তির কিছুক্ষণ পরই হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ওই রোগীর মৃত্যু হয়। নিহতের মরদেহ হাসপাতাল মর্গে রয়েছে।
এ বিষয়ে সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) মাহবুবুর রহমান জানান, গত ১২ নভেম্বর বগুড়া-পাবনা মহাসড়কের উল্লাপাড়ার চৌকিদহ সেতুর নিচ থেকে সিরাজগঞ্জ শহরের রায়পুর এলাকার আমিনুল ইসলাম নামের এক অটোরিকশাচালকের লাশ উদ্ধার করা হয়। তার অটোরিকশা ছিনিয়ে নিয়ে ওই স্থানে দুর্বৃত্তরা লাশ ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। নিহত শাহাদত ওই ঘটনার সন্দেহভাজন আসামি। ডিবি পুলিশের একটি টিম তাকে আটকের পর হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদের সময় শ্বাসকষ্টজনিত কারণে তিনি হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছে। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং ১৪ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে উল্লাপাড়া থানার ওসি একরামুল হোসাইন বলেন, অটোরিকশাচালক আমিনুল ইসলামের মরদেহ উদ্ধারের পর থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে নিহতের বাবা মামলা দায়ের করেছেন। মামলাটি সিরাজগঞ্জ ডিবি পুলিশ তদন্ত করছে।
এ বিষয়ে নিহতের বড় ভাই জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘বৃহস্পতিবার রাতে আমার ছোট ভাইকে পুলিশ সুস্থ অবস্থায় নিয়ে গিয়েছিল। পুলিশি হেফাজতে তার মৃত্যু হয়েছে। আমরা এ ঘটনার বিচার চাই।’
বিডি-প্রতিদিন/জামশেদ