অপ্টাস স্টেডিয়ামের কঠিন উইকেটে যে ম্যাচ অন্তত পাঁচ দিন না হলেও তিনদিনে গড়ানোর কথা, সেটাই মাত্র দুই দিনে শেষ করে অস্ট্রেলিয়া লিখে দিল অদ্ভুত, অবিশ্বাস্য ও প্রায় মহাকাব্যের মতো এক অধ্যায়। ইংল্যান্ডকে প্রথমে গুঁড়িয়ে, পরে রীতিমতো নাচিয়ে ৮ উইকেটের শ্বাসরুদ্ধকর এক জয়ে অ্যাশেজের প্রথম টেস্টে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল তারা। এ ম্যাচে ছিল স্টার্কের আগুন, বোল্যান্ডের শল্যচিকিৎসা, স্টোকসের লড়াই। আর শেষে সবকিছুকে গ্রাস করে নিল এক মানুষের তাণ্ডব, যার নাম ট্রাভিস হেড।
স্টার্কের ঝড়ে ইংল্যান্ডের পতন
ইংল্যান্ডের ব্যাটিং ব্যর্থতার গল্প শুরুই হয় মিচেল স্টার্ককে দিয়ে। ১২.৫ ওভারের উন্মত্ত মন্ত্রে তিনি তুলে নেন ৭ উইকেট—স্টার্কের ক্যারিয়ারের সেরা বোলিং ফিগার। হ্যারি ব্রুকের ৫২ ছাড়া আর কেউই দাঁড়াতে পারেননি। ১৭২ রানে গুটিয়ে যায় ইংল্যান্ড।
স্টোকসের পাল্টা কামানে ধস অজিদেরও
অস্ট্রেলিয়া জবাবে যা করল, সেটিও বিস্ময়কর। বেন স্টোকস মাত্র ৬ ওভারে ৫ উইকেট তুলে নিয়ে অজিদের থামিয়ে দেন ১৩২ রানে। জোফরা আর্চার ও ব্রাইডন কার্স মিলে নিশ্চিত করেন, লিডের ব্যবধান যেন বড় না হয়। দুই দল মিলিয়ে মাত্র একদিনেই ১৭ উইকেট!
দ্বিতীয় দিনে ইংল্যান্ডের আরেক ধস
দ্বিতীয় ইনিংসে সামান্য সুবিধা নিয়েও ইংল্যান্ড নিজেদেরই বিপদ ডেকে আনে। স্কট বোল্যান্ডের নিখুঁত লাইন ও দৈত্যাকার শৃঙ্খলা ইংল্যান্ডকে আবারও নুইয়ে দেয়। তিনি নেন ৪ উইকেট, ডগেট নেন ৩, স্টার্ক নেন আরও ৩। পোপ, আটকিসন কিছুটা লড়াই করলেও ১৬৪ তেই শেষ হয়ে যায় ইনিংস।
মোট লিড? ২০৫ রান। এই স্টেডিয়ামে যে লক্ষ্য অতীতে কখনো সফলভাবে তাড়া হয়নি।
তারপরই নেমে আসে ঝড়, নাম ট্রাভিস হেড
উসমান খাজা ইনজুরিতে ওপেন করতে না নামায় অপ্রত্যাশিতভাবে ইনিংসের শুরুতেই ব্যাট করতে আসেন ট্রাভিস হেড—আর সেখানেই অ্যাশেজের ইতিহাস জন্ম নেয়। মাত্র ৮৩ বলে ১২৩! যেটা এই বোলিং স্বর্গেও অবিশ্বাস্য।
ইংলিশ বোলারদের যেন তিনি পড়ছিলেন বইয়ের মতো। শট বাছাই, গ্যাপ খোঁজা, গতি–বাউন্স সবকিছুকে তুচ্ছ করে একাই ম্যাচটিকে এক সেশনের মধ্যেই ইংল্যান্ডের হাত থেকে ছিনিয়ে নেন। লেবুসেনও ফিরে পান নিজের ছন্দ। যিনি ৫১ রানে অপরাজিত।
অস্ট্রেলিয়া ২৮.২ ওভারেই তুলে ফেলে ২০৫/২।
তবে স্টার্কের হাতেই ম্যাচসেরার মুকুট
স্টার্ক দুই ইনিংসে ১০ উইকেট—৭/৫৮ ও ৩/৫৫ নেন।
ম্যাচ শেষে স্টোকস স্বীকার করেছেন, তিনি ‘শকড’। তবে অস্ট্রেলিয়া? তারা বলছে, এটাই শুরু।
বিডি প্রতিদিন/আশিক