মরু অঞ্চলের খেজুর দিনাজপুরের প্রত্যন্ত অঞ্চলে চাষ করে সফলতা পেয়েছেন জাকির হোসেন নামে কুয়েতফেরত এক প্রবাসী। চারদিকে প্রাচীরে ঘেরা তার বাগানে উঁকি দিচ্ছে মরিয়ম, আজওয়া, খলিজি, মেডজল ও আম্বার জাতের খেজুর গাছ। খেজুর গাছের সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে অধিকাংশ গাছে থোকায় থোকায় ঝুলছে খেজুরের কাঁদি। হলুদ রঙের কাঁদির সঙ্গে ঝুলছে সবুজ রঙের খেজুর। খেজুরগুলোর কোনোটি গোলাকৃতির, কোনোটি লম্বা। খেজুর শুরুতে সবুজ রঙের থাকে। ধীরে ধীরে রং পরিবর্তন হয়ে প্রথমে হলুদ, তারপর গাঢ় লালচে রং ধারণ করে। আগস্টের শেষ দিকে বাজারজাত করার উপযোগী হয়ে উঠে। এত খেজুর ফল দেখার জন্য প্রতিদিনই তাঁর বাগানে দর্শনার্থীরা ভিড় করছেন, কেউ কেউ চারাও কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। বাংলাদেশে এসব খেজুরের ব্যাপক চাহিদা থাকায় আমদানি হয়। বিশেষ করে রমজান মাসে লাখ লাখ টাকার খেজুর দেশে আমদানি করতে হয়। অথচ এ দেশেই খেজুর চাষের দারুণ সম্ভাবনা রয়েছে। এ চাহিদাকে সামনে রেখে সে চেষ্টা করছেন আগামী ১০ বছরের মধ্যে দেশের প্রত্যেকটি গ্রামের বাড়িতে এই খেজুর গাছের চারা রোপণ করতে। তিনি বলেন, ‘রপ্তানি করতে না পারি, যেন খেজুর আর আমদানি করতে না হয়, সে লক্ষ্যেই কাজ করছি। ইতোমধ্যে এই খেজুর চাষ করে নিজের অর্থনৈতিক মুক্তি লাভের পর এলাকার মানুষদের উদ্বুদ্ধ করেছি, ব্যাপক সাড়াও পাচ্ছি।’ এখন তার বাগানে ৪০ লাখ টাকার খেজুর গাছের চারা এবং ১০ লাখ টাকার খেজুর বিক্রির আশা করছেন জাকির হোসেন। দিনাজপুরের ফুলবাড়ী শহরের ঢাকা মোড় থেকে রংপুর যাওয়ার সড়কের বামদিকে চোখে পড়বে প্রাচীরের অভ্যন্তরে লাগানো ১৯টি খেজুর গাছের বাগান। প্রতিটি দুই বছর বয়সি খেজুর গাছের চারা বিক্রি করছেন এক হাজার টাকায়। আর প্রতিটি কলম চারা বিক্রি করছেন ১৫-৩০ হাজার টাকায়। ছাদে লাগানোর জন্য প্লাস্টিকের ড্রামেও চারা প্রস্তুত করেছেন তিনি। জাকির হোসেন, ফুলবাড়ী পৌর শহরের স্বজনপুকুর এলাকার আবু আব্বাসের ছেলে। ১৯৯৫ সালে সফলতার সঙ্গে এসএসসি পাস করার পর আর পড়াশোনা এগোয়নি। ১৯৯৯ সালে এক নিকট আত্মীয়ের মাধ্যমে কুয়েত প্রবাসী হন। কুয়েতের ‘সুয়েব’ শহরে মোটর গ্যারেজে চাকরি নেন। এরপর ধীরে ধীরে কর্মচারী থেকে গ্যারেজের মালিক হন। সুয়েব শহরের প্রতিটি বাড়িতে, রাস্তায় প্রায় সবখানে খেজুরগাছ দেখে উদ্বুদ্ধ হন জাকির হোসেন। এটা দেখে নিজের দেশে খেজুর বাগান করার পরিকল্পনা করেন। চাষের পদ্ধতি শিখেন অনলাইনসহ খেজুর চাষিদের কাছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোতে থাকেন তিনি। ২০১৭ সালে ফুলবাড়ী শহরের স্বজনপুকুর এলাকায় নিজের ২০ শতক জমিতে বোপণ করেন খেজুর বীজ। তারপর বীজ থেকে চারা, চারা থেকে পরিপূর্ণ গাছ এবং ২০২২ সালে প্রথমবারে রোপণকৃত গাছে দেখা মেলে কাক্সিক্ষত সেই খেজুর ফলের। প্রায় দুই একর জমিতে খেজুর গাছের বাগান ও চারা উৎপাদন করছেন তিনি। নার্সারিতে বিক্রির উপযোগী ১০ হাজারেরও অধিক চারা রয়েছে। গত তিন বছরে প্রায় ৪০ লাখ টাকার চারা বিক্রি করেছেন। এবার সর্বনিম্ন ৫০০ টাকা কেজি দর পেলেও ১০ লাখ টাকার খেজুর বিক্রি করবেন এমনটাই আশা করছেন জাকির হোসেন। ফুলবাড়ী উপজেলা (ভারপ্রাপ্ত) কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শাহানুর রহমান বলেন, ‘জাকিরের খেজুর বাগান পরিদর্শন করেছি। এই খেজুর চাষ এ অঞ্চলের কৃষিতে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে।’
শিরোনাম
- পিরোজপুর সরকারি কলেজে ভাঙচুর: ভিডিওধারণকারী ছাত্রদল নেতা বহিষ্কার
- মুন্সীগঞ্জে তারেক রহমানের ৩১ দফা প্রচারে লিফলেট বিতরণ
- ‘লিটল স্টারের’ বিচারকের আসনে কারা?
- নাশকতার চেষ্টা, গ্রেফতার আওয়ামী লীগের ৫ নেতাকর্মী
- ‘দাঁড়িপাল্লার বিজয় নিশ্চিত করতে ময়দানে আপোষহীন থাকতে হবে’
- প্রকাশ হলো মাহমুদ মানজুরের বই ‘গীতিজীবন’
- ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দাবি দুলুর
- গোপনে অ্যাপে সংগঠিত হচ্ছে দুর্বৃত্তরা, ৫০ থানায় নিরাপত্তা জোরদার
- ‘বিদেশিদের প্রেসক্রিপশনে এদেশের মানুষ চলতে চায় না’
- একটি দল ভোটের মাঠে জান্নাতের টিকিট বিক্রি করছে: নবীউল্লাহ নবী
- নারায়ণগঞ্জে বিএনপিকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে মাসুদের র্যালি
- ভালুকায় হেমন্তের কবিতা উৎসব অনুষ্ঠিত
- ছাত্রদের যৌন হয়রানির মামলায় ঢাবি অধ্যাপক কারাগারে
- চট্টগ্রামে অগ্নিকাণ্ডের নেপথ্যে যত কারণ
- খালেদা জিয়ার পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু
- মাগুরায় ১৬ ক্লাবের অংশগ্রহণে জমজমাট ক্রিকেট আসর
- ফেনীতে পুলিশের ওপর হামলা, আহত ৩
- কুড়িগ্রামে নতুন নারী জেলা প্রশাসক
- এনসিপি’র মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের সময়সীমা বাড়ানো হলো
- জয়পুরহাট গার্লস ক্যাডেট কলেজের প্রাক্তন ক্যাডেটদের প্রথম পুনর্মিলনী উদযাপিত
মরুর খেজুর চাষে বাজিমাত
লাভের মুখ দেখছেন জাকির হোসেন। ৪০ লাখ টাকার চারাগাছ ও ১০ লাখ টাকার খেজুর বিক্রির আশা
রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর
প্রিন্ট ভার্সন
এই বিভাগের আরও খবর