মানুষের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এমন একাধিক কাজে সহায়তা করতে উন্নত প্রযুক্তির রোবট আবিষ্কার করে সাড়া ফেলেছেন চুয়াডাঙ্গার তরুণ জাহিদ হাসান জিহাদ। ইতোমধ্যে তার উদ্ভাবিত ‘হেক্সাগার্ড রোভার’ নামের রোবটটি মালয়েশিয়ায় আয়োজিত এক প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক লাভ করে। জিহাদ জানান, গত ২১ থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর মালয়েশিয়ার সেগাই (SEGi) বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্দোনেশিয়ান ইয়াং সায়েন্টিস্ট অ্যাসোসিয়েশন (ইয়াশা-IYSA) আয়োজিত বিশ্ব উদ্ভাবন প্রতিযোগিতা ও প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। সেখানে বিশ্বের ১৭টি দেশের দুই শতাধিক প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বাংলাদেশের হয়ে অংশগ্রহণ করে জিহাদের ‘চুয়াডাঙ্গা সায়েন্স অ্যান্ড রোবটিক্স ক্লাব’। পাঁচটি বিভাগের মধ্যে ‘আইটি অ্যান্ড রোবটিক্স’ বিভাগে অংশ নিয়ে জিহাদের ‘হেক্সাগার্ড রোভার’ সেরা পুরস্কার স্বর্ণপদক বিজয়ী হয়। জিহাদ জানান, তার উদ্ভাবিত ‘হেক্সাগার্ড রোভার’ নামের রোবটটি ছয়টি ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ে মানুষের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এমন কাজে অংশ নিতে পারে। এর মধ্যে বোমা শনাক্ত, নিষ্ক্রিয়করণ ও সামরিক নিরাপত্তা, অগ্নিকা-ে উদ্ধার তৎপরতা, বন্যপ্রাণী ও কৃষির নিরাপত্তা, শিল্পকারখানার নিরাপত্তা, চিকিৎসা ও জরুরি সরবরাহ এবং সব ধরনের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা। এতে তিনটি ভিন্ন ধরনের ক্যামেরা, কিছু সেন্সর, ইলেকট্রনিক ডিভাইস, রোবটিক হাতসহ আধুনিক প্রযুক্তির যন্ত্রাংশ ব্যবহার করা হয়েছে। এটি উচ্চ তাপ সহনীয় স্টেইনলেস স্টিলের কাঠামোতে আবদ্ধ হওয়ায় এক হাজার ৩০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাতেও কাজ করতে সক্ষম।
জিহাদের মা নাসিমা খাতুন জানান, জিহাদ ছোট থেকেই প্রযুক্তির প্রতি আগ্রহী। হাইস্কুলে পড়ার সময় নিজ উপজেলা দামুড়হুদা ও চুয়াডাঙ্গা জেলা পর্যায়ে বিজ্ঞান মেলায় অংশগ্রহণ করেছে। বরাবরই সে সাফল্য অর্জন করেছে। সেই ধারাবাহিকতায় চলতি বছর তার উদ্ভাবিত ‘হেক্সাগার্ড রোভার’ জেলার গ-ি পেরিয়ে জাতীয় পর্যায়ে স্বীকৃত হয় এবং মালয়েশিয়ায় আয়োজিত প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পায়।’ জিহাদের সহযোগীরা জানান, তারা চুয়াডাঙ্গা রোবটিক্স ক্লাবের সদস্য হওয়ায় নিজেরাও গর্বিত। জাহিদ হাসান জিহাদ বর্তমানে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা সরকারি কলেজে এইচএসসিতে অধ্যয়নরত। সে দর্শনার পরানপুর গ্রামের জয়নাল আবেদীন ও নাসিমা খাতুনের ছেলে। দামুড়হুদা উপজেলা শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার রাফিজুল ইসলাম বলেন, জিহাদের উদ্ভাবনী স্বত্বাকে এগিয়ে নিতে দামুড়হুদা উপজেলা শিক্ষা অফিস ও উপজেলার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা পাশে রয়েছেন। সে শুধু দামুড়হুদার মুখ উজ্জ্বল করেনি, বাংলাদেশেরও মর্যাদা বৃদ্ধি করেছে। জাহিদ হাসান জিহাদ বলেন, ‘সামনের দিনে আমার এ উদ্ভাবন আরও আধুনিকায়ন করা হবে। যুক্ত হবে সম্পূর্ণ প্রযুক্তি। বাণিজ্যিক উৎপাদনের মাধ্যমে একে সহজলভ্য করা হবে।’