বাঙ্গি চাষে বেশ লাভবান হচ্ছেন মাগুরার কৃষকরা। পেঁপে, পেয়ারা, লিচু ও আম বাগানের মধ্যে কৃষকরা সাথি ফসল হিসাবে বাঙ্গির চাষ করছেন।
বাঙ্গি চাষ অধিক লাভজনক ও ফলন বেশি হওয়ায় মাগুরার কৃষকরা দিন দিন এ চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। ধান পাট বা অন্য ফসল আবাদের চেয়ে অল্প পুজি বিনিয়োগ করে এটি চাষের মাধ্যমে তারা আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার পাশাপাশি সাংসারিক নিত্য প্রয়োজনীয় খরচ মেটাচ্ছেন এ বাঙ্গি চাষের মাধ্যমে। ফলে অধিক অর্থ ঘরে তুলতে পেরে কৃষকরাও খুশি।
মাগুরা সদর উপজেলার শিবরামপুর, হাজরাপুর, নড়িহাটি, হাজিপুর, মির্জাপুর, মিঠাপুর, ডবলেশনগরসহ আশপাশের অনেক গ্রামের কৃষকরা প্রতিবছর অধিক জমিতে বাঙ্গি চাষ করে থাকেন। কৃষকরা জানান, এ চাষে সার কীটনাশক তেমন লাগে না বললেই চলে। এ ফলের বিঘা প্রতি ফলন হয় ৮-১০ হাজারটি। যা প্রায় ৫০ হাজার থেকে ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়ে থাকে।
মাগুরা সদর উপজেলার নড়িহাটি গ্রামের কৃষক সাকেন বিশ্বাস এ বছর ১৬ বিঘা জমিতে বাঙ্গি চাষ করেছেন। ১০ বিঘা জমি ৪ লাখ টাকায় লিজ নিয়েছেন তিনি। বাকি ৬ বিঘা জমি তার নিজের। বাঙ্গি বিশেষ করে মাঘ মাসে মাটিতে বীজ বপন করতে হয়। প্রায় ৩ মাসের স্বল্প জীবনকালীন সময়ে কৃষকরা এটি বিক্রির মাধ্যমে নগদ অর্থ ঘরে তুলতে পারেন।
সরেজমিন সাকেন বিশ্বাসের বাঙ্গি ক্ষেতে গিয়ে কথা হয় তার সাথে। তিনি বলেন, ‘আমি প্রতিবছরই বাঙ্গি চাষ করে থাকি। অন্য ফসলের চেয়ে এটি চাষে লাভ যেমন বেশি, তেমনি খরচও কম। রমজান মাসে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বাঙ্গির চাহিদা রয়েছে ব্যাপক। ব্যাপারীরা জমি থেকেই বাঙ্গি পাইকারী দরে কিনে নিয়ে যান। প্রতি ট্রাক বাঙ্গি ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। আমার ১৬ বিঘা জমি থেকে ৮ লাখ টাকার বেশি বিক্রি করতে পারবো বলে আশা করছি।’
একই উপজেলার শিবরামপুর গ্রামের অপর নালিমবাঙ্গি চাষি শেখ দিদার জানান, এবছর তিনি ১০ বিঘা জমিতে বাঙ্গি চাষ করেছেন। ভালো দাম পাওয়ায় যা তিনি ব্যাপারীদের কাছে ২ লাখ ৮০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন।
তিনি আরো জানান, বাঙ্গি চাষ খুব লাভজনক। যা পেঁপে, লিচু, আম, পেয়ারার ক্ষেতে অনেকেই সাথি ফসল হিসেবে চাষ করছেন। অল্প সময়ের মধ্যে অধিক অর্থ ঘরে তোলা সম্ভব। যে কারণে কৃষকরা বাঙ্গি চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।
মাগুরা সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা নুসরাত কবির জানান, কেবলমাত্র সদর উপজেলার হাজিপুর ও হাজরাপুর ইউনিয়নে বিভিন্ন গ্রামে ১১৪ হেক্টর জমিতে বাঙ্গির চাষ হয়েছে। যা একক আবাদের পাশাপাশি সাথি ফসল হিসেবেও এ অঞ্চলের কৃষকদের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
বিডি প্রতিদিনি/হিমেল/এ মজুমদার