১৬ জুলাই, ২০১৯ ১৭:৫৯

মৌলভীবাজারে নদ-নদীর পর হাওরের পানি বেড়ে গ্রামাঞ্চল প্লাবিত

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:

মৌলভীবাজারে নদ-নদীর পর হাওরের পানি বেড়ে গ্রামাঞ্চল প্লাবিত

মৌলভীবাজারের বন্যা পরিস্থিতি অবনতি করেছে। কুশিয়ারা, মনু ও ধলাই নদীর পানি বাড়ার ফলে নতুন করে গ্রামাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার পর বেড়েছে হাওরের পানি। নতুন করে প্লাবিত হয়েছে হাওরপাড় ও তার আশপাশের এলাকা। ইতিমধ্যে জেলার ৬টি উপজেলার ২৫টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার শতাধিক গ্রামে পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন লক্ষাধিক মানুষ। 

মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বিকেলের প্রতিবেদনে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানান, মনুর পানি চাদনীঘাট ব্রিজ এলাকায় বিপদসীমার ৯৯ সে.মি উপর দিয়ে ও মনু রেলওয়ে ব্রিজ এলাকায় বিপদসীমার ৫ সে.মি নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধলাই বিপদসীমার ১৯ সে.মি নিচে ও কুশিয়ারা বিপদসীমার  ৫৬ সে.মি উপরে প্রবাহিত হচ্ছে। উজানে পানি কমতে থাকলেও নিম্নাঞ্চল ও হাওরের পানিতে বাড়ছে।

এদিকে নদীর পানি বাড়ার সাথে জেলার হাওরগুলোরও পানি বেড়েছে। এরই মধ্যে হাকালুকি হাওরের পানি বৃদ্ধি পেয়ে কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলার কিছু এলাকায় হাওর পাড়ে নতুন করে প্লাবন দেখা দিয়েছে।

জানা যায়, সদর উপজেলার মনুমুখ, আখাইলকুরা, চাদনীঘাট (আংশিক), একাটুনা (আংশিক) ও খলিলপুর ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। মৌলভীবাজার পৌরসভার সৈয়ারপুর এলাকায়ও শতাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়েছেন। রাজনগর উপজেলা ফতেহপুর, উত্তরভাগ ও  কামারচাক ইউনিয়ন। কমলগঞ্জ  উপজেলার ৯টির মধ্যে সবগুলো ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। কুলাউড়া উপজেলার ভুকশিমইল, বরমচাল (আংশিক) টিলাগাও ও হাজিপুর। 
এদিকে জুড়ী উপজেলার জায়ফরনগর ও পশ্চিম জুড়ী ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে প্লাবন দেখা দিয়েছে। এছাড়া বড়লেখা উপজেলার তালিমপুর ইউনিয়ন ও দাসেরবাজার ইউনিয়নে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, সারা জেলায় ৫৬ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়েছেন। তবে বেসরকারী হিসেবে এর পরিমান লক্ষাধিক। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলার সব ক’টি আশ্রয় কেন্দ্র খুলে দেয়া হয়েছে। এদিকে প্রথম ধাপে চারটি উপজেলায় ২২ মে টন চাল ও হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দিলেও তা বাড়ানো হয়েছে। বন্যার তৃতীয় দিনে চারটি উপজেলায় ২ শ’ ৩৬ মেট্রিকটন চাল ও নগদ ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে। বন্যার স্বাস্থ ঝুঁকি মোকাবিলায় ৭৪ টি মেডিকল টিম কাজ করছে পুরো জেলায়। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটসহ প্রাথমিক চিকিৎসা ও ওষুধ প্রদান করা হচ্ছে।

মৌলভীবাজার সদর, বড়লেখা, জুড়ী, কমলগঞ্জ ও রাজনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বন্যা মোকাবিলায় সর্বোচ্চ তৎপর রয়েছে উপজেলা প্রশাসন।বন্যাকবলিতদের মাঝে জেলা প্রশাসনের বরাদ্ধকৃত ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে।

ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফুল আলম খান বলে, বন্যাকবলিত প্রত্যেক উপজেলায় বরাদ্ধ পূর্বের থেকে বরাদ্ধ বাড়ানো হয়েছে। কোথাও কোনো ত্রাণের অভাব নেই। তারপরও কোনো ত্রাণের নতুন চাহিদা হলে তাৎক্ষণিক ত্রাণ দেয়ার ব্যবস্থা আছে। আশা করা হচ্ছে বন্যা পরিস্থিতি উন্নতি করবে।

বিডি প্রতিদিন/মজুমদার

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর