১৬ ডিসেম্বর, ২০১৯ ১১:০৯

ফিরছে ঐতিহাসিক চাওয়াই নদীর যৌবন

সরকার হায়দার, পঞ্চগড়:

ফিরছে ঐতিহাসিক চাওয়াই নদীর যৌবন

ফিরে আসছে পঞ্চগড়ের ঐতিহাসিক চাওয়াই নদীর যৌবন। সম্প্রতি এই নদীর খনন কাজ শুরু হয়েছে। খননের ফলে নদীর হারিয়ে যাওয়া প্রবাহ ফিরে আসতে শুরু করেছে। ২৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এই নদী স্রোত হারিয়ে মরে যেতে বসেছিলো। 

মহান মুক্তিযুদ্ধে এই নদীর উপড়ে থাকা একটি ব্রিজ ধ্বংস করেছিলো খান সেনারা। অমরখানা এলাকায় মুক্তি সেনাদের সঙ্গে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হয় এই নদীর দুই পাড়ে। কিন্তু নদী পার হতে পারেনি খান সেনারা। তার আগেই স্বাধীনতা এসেছিলো। মাত্র দুই যুগ আগেও এই নদী ছিলো প্রবাহমান। ছিলো মাছ, জলজ নানা উদ্ভিত ও প্রাণী। দুই পাড়ের হাজার হাজার একর জমিকে পলি দ্বারা উর্বরতা দিয়ে যেত চাওয়াই। চাষাবাদে দিত পানি। অন্তত ৩০ গ্রামের কয়েক হাজার কৃষক এই নদীর উপর নিভর্রশীল ছিল। 

নদীর মাছের উপর নির্ভর ছিলো কয়েক হাজার মৎসজিবী মানুষ। হঠাৎ নদী নব্যতা হারাতে শুরু করে। ভারতীয় অংশে বাধ দিয়ে পানি প্রত্যাহারের ফলে নদী হারাতে থাকে যৌবন। এরপর স্থানীয়দের অপরিকল্পিত ভাবে পাথর উত্তোলন, নদীর জমি দখল করে চা বাগান গড়ে তোলার ফলে নদীটি মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে চলে যায়। 

এমন অবস্থায় সরকার  নদী খননের ব্যাপক উদ্যোগ গ্রহণ করলে এই নদী খননের প্রস্তাবনা দেয় পঞ্চগড় পানি উন্নয়ন বোর্ড। পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ৬৪ জেলায় ছোট নদী, খাল এবং জলাশয় পুনর্খনন প্রকল্পের  প্রায় সাত কোটি টাকা ব্যয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। এরই মধ্যে নদীটির প্রায় ৪ কিলোমিটার খনন কাজ সম্পন্ন হয়েছে। 

নদীটি ২০ মিটার প্রসস্থ এবং ৬ ফিট গভীর করে খনন করা হচ্ছে। উভয় পাড়কে সুরক্ষিত এবং লোক চলাচলের ব্যবস্থা করাও হচ্ছে। খননের ফলে সৌন্দর্যও বাড়ছে। 

পঞ্চগড় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান জানান, দিন রাত কাজ করে এই নদী খননের পরিকল্পনা করা হয়েছে। বর্তমানে খনন চলছে। পরিকল্পনার সঠিক বাস্তবায়নের জন্য তৎপর রয়েছি আমরা। খনন শেষ হলে এই এলাকার আমূল পরিবর্তন আসবে। 

চাওয়াই এর উৎপত্তি ভারতে। সদর উপজেলার অমরখানা এলাকায় এই নদী বাংলাদেশে প্রবেশ করে। ২৩ কিলোমিটার প্রবাহিত হয়ে এই নদী মিলিত হয় করতোয়ার সাথে। চাওয়াই নদী খনন কাজে সব সময় তদারকি করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা ও ঠিকাদারের প্রতিনিধিরা। 

পঞ্চগড় পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী শাহীনুর ইসলাম,তৌহিদুর সারোয়ার নেতৃত্বে খাদেমুল ইসলাম জনি, মনিরুজ্জামান মনির, হাসান আলী তুষার, মিজানুর রহমান, মাহমুদ হাসান, আক্তার হোসেন, নজিবর রহমান, জয়নাল আবেদীন, রাজসহ একদল তরুণ নদী প্রেমী নদী খননে সার্বক্ষনিক দায়িত্ব পালন করছে। 

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর