২৭ মে, ২০২০ ২২:৩৮

কুড়িগ্রামে ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

কুড়িগ্রামে ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

সংগৃহীত ছবি

কুড়িগ্রামে প্রচণ্ড ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে সদর, নাগেশ্বরী, রাজারহাট, ভুরুঙ্গামারী ও ফুলবাড়ী উপজেলাসহ ৫ উপজেলার ক্ষেতের পাকা ধানসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে।

জেলার ৯ উপজেলায় একযোগে বিভিন্ন এলাকায় এ ঝড় ও বৃষ্টিপাত ঘটে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষক।

এলাকাবাসীরা জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা, শিমুলবাড়ী, ভাঙ্গামোড় এবং রাজারহাটের ছিনাই, ঘড়িয়ালডাঙাসহ বিভিন্ন এলাকার ওপর দিয়ে শিলাবৃষ্টিসহ ঝড় বয়ে যায়। এতে উঠতি বোরো ধানের ক্ষেত, পাট ও বিভিন্ন রকমের শাক-সবজিসহ ফসলের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। 

ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের কৃষক তপন চন্দ্র জানান, গেল শিলাবৃষ্টিতে হামার পাট ক্ষেতের অনেক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও কৃষক নুর আলম ও সালাম মিয়া জানান, শিলাবৃষ্টিতে আমাদের  ক্ষেতের অর্ধেক পাকা ধান ডুবে গেছে। শীষ শুধু দেখা যায়। এছাড়াও উচু জমির পাকা ধান ঝড়ে পড়ছে। 

এ ব্যাপারে ফুলবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহবুবুর রশীদ জানান, বুধবারের শিলাবৃষ্টিতে ধান এবং পাটের আংশিক ক্ষতি হয়েছে। অন্যদিকে, গত ৭দিনের প্রবল বৃষ্টিপাতে ডুবে গেছে কুড়িগ্রাম সদরের কয়েকটি এলাকার নিমাঞ্চল। চলতি মৌসুমের উঠতি ইরি-বোরো ধান, পাট, ভুট্টাসহ বিভিন্ন প্রকার সবজি তলিয়ে গিয়ে কৃষকরা হতাশ হয়ে পড়েছে। এদিকে, অতি বৃষ্টির কারণে পাকা বোরো ধান তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকরা পড়েছেন চরম বিপাকে। যারা আগে ধান কেটে নিয়েছেন তাদের সমস্যা নেই। কিন্তু যারা দেরিতে রোপন করেন তাদের দেরিতেই ধান পেকেছে। এছাড়াও অনেক কৃষক ধান কাটলেও বৃষ্টির কারণে তা মাড়াই করতে পারছেন না। 

অন্যদিকে, ভুরুঙ্গামারী উপজেলায় এবছর বোরোর বাম্পার ফলন হলেও কৃষকদের মুখে হাসি নেই।কারণ গত কয়েকদিনের প্রচণ্ড বর্ষণের কারণে পাকা ধান তলিয়ে গিয়ে এখন তারা বিপাকে। আবার অনেকেই পানি নেমে যাওয়ার অপেক্ষায় প্রহর গুণছেন।

কৃষকরা বলছেন, চোখের সামনেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে তাদের কষ্টে উৎপাদিত শত শত মণ ধান। বৃষ্টির কারণে শুকাতে পারছেন না কেটে নেয়া ধান। 

ভুরুঙ্গামারী উপজেলার জয়মনিরহাট ইউনিয়নের নলেয়া গ্রামের কৃষক শহিদুল ও চর ভূরুঙ্গামারীর কৃষক আমিনুর রহমান জানান, আমার জমির সম্পূর্ণ ধান পেকে গেছে। ভেবেছিলাম প্রথম দিনের বৃষ্টি শেষ হলেই ধান কাটবো কিন্তু গত সাত দিনেও বৃষ্টি বন্ধ না হওয়ায় জমির পাকা ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। ধান গাছ শীষের নীচের দিক থেকে পঁচে যাচ্ছে। কি করবো বুঝতে পারছি না। এছাড়াও ক্ষেত তলিয়ে গেছে যত দ্রুত সম্ভব পানি সরে গেলে ধান কাটতে পারলে হয়তো টিকাতে পারব। রাজারহাট উপজেলায় শিলাবৃষ্টিতে ঝড়ে পড়েছে গাছের কাচা আম। অতিবৃষ্টির কারণে এখানেও কৃষকদের পাকা ধান ও কৃষি শাক-সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

উপজেলার কৃষি ও আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের পর্যবেক্ষক সুবল চন্দ্র জানান, গত এক সপ্তাহ যাবত এ জেলায় বৃষ্টি হচ্ছে। গড় বৃষ্টিপাত হয়েছে ৩০ দশমিক ৯৭ মিলিমিটার। জেলার সবচেয়ে বেশি নাগেশ্বরী ও ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ দুুই উপজেলার নিমাঞ্চলের বেশীরভাগ ধান ডুবে গেছে পানিতে। 

বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর