সরকারি বরিশাল কলেজের নাম পরিবর্তন করে মহাত্মা অশ্বিনী কুমার দত্তের নামে করার পক্ষে-বিপক্ষের কর্মসূচিতে উত্তপ্ত বরিশালের রাজপথ। কলেজের নাম অপরিবর্তিত রাখার দাবিতে সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা ইতিমধ্যে মানববন্ধন এবং প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেন। অপরদিকে কলেজের নাম পরিবর্তন করে অশ্বিনী কুমারের নামে করার দাবিতে সাংস্কৃতিক ও সুশীলদের একাংশ সংবাদ সম্মেলন এবং কমিটি গঠন করেছে। এই ইস্যুতে এবার একই স্থানে পক্ষে-বিপক্ষে পাল্টাপাল্টিতে কর্মসূচিতে উত্তাপ ছড়িয়ে পড়ে বরিশালের রাজপথে।
অশ্বিনী কুমারের নামে কলেজের নাম করণের দাবিতে পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী বুধবার সকাল ১১ টায় নগরীর সদর রোডে বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ করে জেলা বাসদসহ ৭টি সংগঠন। একই সময়ে সদর রোডের অপরপাশে অশ্বিনী কুমার হলের সামনে কলেজের নাম অপরিবর্তিত রাখার দাবিতে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ এবং সমাবেশ করেন কলেজের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। একই স্থানে দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচীতে সাময়িক উত্তাপ ছড়ায় নগরীর সদর রোডে। তবে পুলিশ সতর্ক থাকায় কোন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি।
সদর রোডে পশ্চিমপাশে বাসদসহ অন্যান্য ৭টি সংগঠনের বিক্ষোভ সমাবেশে অশ্বিনী কুমারের বসতভিটায় প্রতিষ্ঠিত সরকারি বরিশাল কলেজের নামকরণ তার নামে করার দাবি জানানো হয়। এই দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেন জেলা বাসদ আহ্বায়ক প্রকৌশলী ইমরান হাবিব রুমন ও সদস্য সচিব ডা. মনিষা চক্রবর্তী।
এদিকে কলেজের নাম অপরিবর্তিত রাখার দাবিতে একই সময় সদর রোডের পূর্ব পাশে মঞ্চ করে গণস্বাক্ষর আদায় কর্মসূচি পালন করেন কলেজের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা। ওই কলেজের সাবেক ভিপি মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট একেএম জাহাঙ্গীরসহ ক্ষমতাসীন দলের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে গণসাক্ষর আদায় কর্মসূচিতে ব্যাপক লোক সমাগম হয়। এতে পুরো সদর রোডে অচলাবস্থার সৃস্টি হয়। দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ মানুষ।
গণসাক্ষর আদায় কর্মসূচীর সমাবেশে ওই কলেজের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থী এবং মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি একেএম জাহাঙ্গীরসহ স্থানীয় ক্ষমতাসীন দলের নেতারা বলেন, এই কলেজের সাথে তাদের আবেগ-অস্তিত্ব জড়িত। জেলা প্রশাসন কিছু লোকের পরামর্শে ব্যক্তিগতভাবে কলেজের নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছেন। এর দায়ভার একান্ত জেলা প্রশাসকের। স্পর্শকাতর এই ইস্যুতে সব দল-মতের মতামত নিলে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না। নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত তারা কোনভাবেই মানবেন না। এর বিরুদ্ধে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়া হয় গণস্বাক্ষর আদায় কর্মসূচীতে।
দুই পক্ষের কর্মসূচি ঘিরে দেড় ঘণ্টার অসহনীয় যানজট ও উত্তেজনার পর স্বাভাবিক হয় সদর রোডের পরিস্থিতি। এই ধরনের বিব্রতকর পরিস্থিতি থেকে মুক্তি চায় নগরবাসী।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান বলেন, স্থানীয় সাংস্কৃতিক এবং সুশীল সমাজের দাবীর প্রেক্ষিতে তিনি কলেজের নামকরণ অশ্বিনী কুমারের নামে করার প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছেন। মন্ত্রণালয় শিক্ষা বোর্ডের কাছে মতামত চেয়ে পাঠিয়েছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে মন্ত্রণালয়।
যদিও উদ্ভুত পরিস্থিতিতে কলেজের নাম পরিবর্তন করার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে কোন ধরনের মতামত না দেবেন না বলে সাফ জানিয়েছেন শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. ইউনুস।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা