ইলিশের ভরা মৌসুমে চাঁদপুরের বড় স্টেশন মাছঘাটে ইলিশের ব্যাপক আমদানি শুরু হয়েছে। আগস্ট-সেপ্টেম্বর ইলিশের ভরা মৌসুম। এসময়ে চাঁদপুর মাছঘাটের আড়তে প্রতিদিন ১২শ’ থেকে ১৫শ’ মণ বিভিন্ন সাইজের ইলিশ আমদানি হচ্ছে।
এছাড়াও স্থানীয় পদ্মা-মেঘনা নদীতে জেলেদের জালে তেমন একটা ইলিশ ধরা পড়ছে না। সপ্তাহ খানেক ধরে দক্ষিণাঞ্চলের বড় ইলিশের আমদানি হওয়ায় মাছঘাট সরগরম হয়ে উঠেছে। চাঁদপুর মাছঘাটে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে পাইকারি, আড়ৎদার, খুচরা বিক্রেতা ও শ্রমিকদের মাঝে। গত ৮-১০ বছরের মধ্যে মৌসুমে নামার এমন ইলিশের আমদানিতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ীরা।
শনিবার দুপুরে শহরের বড় স্টেশন মাছঘাটে গিয়ে দেখা গেছে ডাকাতিয়া নদীর পাড়ে বড় ট্রলারে করে দক্ষিণাঞ্চলের ভোলা, দৌলতখাঁ, চরফ্যাশন থেকে বড় সাইজের ইলিশ নিয়ে এসেছে ৮/১০জন ব্যবসায়ী। শ্রমিকরা এই ইলিশ টুকরিতে করে আড়তে উঠাচ্ছে। বিক্রির জন্য বাছাই করা ছোট বড় ইলিশের স্তূপ আড়তগুলোর সামনে রাখার পর, মুহূর্তেই হাঁকডাক দিয়ে বিক্রি করছেন আড়ৎদাররা।মৎস্য আড়ত ব্যবসায়ী মিজান পাটোয়ারী বলেন, গত সপ্তাহ থেকে যেসব ইলিশ আমদানি হচ্ছে। এসব ইলিশের অধিকাংশ সাইজ ১ কেজি। আজকের বাজারে ২শ’ থেকে ৩শ’ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি মণ ১০-১২ হাজার টাকা, ৫শ’ থেকে ৬শ’ গ্রামের ইলিশ প্রতিমণ ২৪-২৫ হাজার টাকা, ১ কেজি ওজনের ইলিশ প্রতি মণ ৩০-৩২ হাজার টাকা, ১ কেজি ৪শ’ গ্রাম এবং দেড় কেজি ওজনের ইলিশ প্রতিমণ ৩৬-৪০ হাজার টাকা, ছোট সাইজের ইলিশগুলো বেশিরভাগ চাঁদপুরের স্থানীয় জেলেরা পদ্মা-মেঘনা নদী থেকে আহরণ করে থাকে।
মাছঘাট শ্রমিক মোক্তার গাজী বলেন, দক্ষিণাঞ্চল থেকে ইলিশের ট্রলার রাত ১১টা থেকে সকাল পর্যন্ত আসতে থাকে। রাতে আসা ইলিশ আড়তে নামিয়ে সকাল থেকে বিক্রি হতে থাকে। গত কয়েকমাস অবসর সময় কাটালেও এখন মাছ উঠানো, প্যাকিং করা, বরফ দেয়া এবং রপ্তানি করা গাড়িতে উঠানোর কাজে ব্যস্ত।
জেলা মৎস্য বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. শবে বরাত বলেন, গত সপ্তাহ খানেক ধরে দক্ষিণাঞ্চলের ইলিশের আমদানি বেড়েছে। মৌসুমে আহরণকৃত এই ইলিশের যথেষ্ট স্বাদ রয়েছে। অন্যান্য বছর বড় সাইজের ইলিশের আমদানি এতটা দেখা যায়নি। প্রায় ১০বছর পূর্বে একবার এই সময়ে ইলিশের ব্যাপক আমদানি হয়েছিল।
পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে সাগর থেকে ইলিশ উজানের দিকে উঠে আসে। চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় বড় সাইজের ইলিশের আমদানি নেই বললেই চলে। এই ঘাটের ৬-৭জন ব্যবসায়ী দক্ষিণাঞ্চলের ইলিশ আমদানি করেন। এসব ইলিশে চাঁদপুরে স্থানীয় বাজার এখন সয়লাব। এছাড়াও কুমিল্লা, ঢাকা, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, বগুড়া, দিনাজপুর, পাবনা, ময়মনসিংহ ও সিলেটে রপ্তানি করা হয়।
বিডি প্রতিদিন/এজে