নেত্রকানোয় ১৯৯৫ সালে নির্মিত হওয়া বয়রালা নদীর ওপরের বেইলী সেতুটি এখন মানুষের দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কয়েকদিন পর পরই হুটহাট পাটাতন ভেঙে সৃষ্টি হয় সপ্তাহখানেকের জন্য লাগাতার দুর্ভোগ। এ যেন পরিণত হয়েছে এক মরণ ফাঁদে।
নেত্রকোনা-মদন-খালিয়াজুরী সড়কে বয়রালা নদীর উপর দীর্ঘদীনের পুরনো বেইলী সেতুটি এক সময়ের আশীবার্দ হলেও এখন এটি অভিশাপে রূপ নিয়েছে। যোগাযোগের অন্য কোনো সড়ক না থাকায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই সেতু দিয়েই চলাচল করে সকল প্রকার যানবাহন।
ধান, মাছের ট্রাকসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যাত্রীবাহী বাস চলাচল করে এই সেতু দিয়েই। এমনকি উচিৎপুর ট্রলার ঘাটে অঘোষিত পর্যটন স্পট হিসেবে হাওর দেখতে প্রতিবছর লাখ লাখ মানুষের ঢল নামে এই সড়ক দিয়ে।
ফলে কিছু দিন পরপর পাটাতন ভেঙে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েন সাধারণ মানুষ। ঢাকা-নেত্রকোনা-মদন সড়কের সকল বাসের যাত্রীদের বয়রালা নেমে যেতে হয়। সেতুটি পার হয়ে অপরপ্রান্তে গিয়ে বাড়তি টাকা গুনে আবারো অটো রিকশায় করে আরো ১০ থেকে ১৫ এবং ২০ কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছতে হয় তাদের।
এভাবেই গত কয়েকবছর ধরে সাধারণ মানুষের চলাচল অব্যাহত রয়েছে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে। গত প্রায় ৫ বছর যাবৎ এই ভয়বহ অবস্থা চলে আসলেও কর্তৃপক্ষ বা স্থানীয় জন প্রতিনিধিদের নজর কাড়েনি। এমন অবস্থায় দ্রুত পাকা সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীসহ স্থানীয়রা।
তবে পুরনো এই জরাজীর্ণ সেতুর প্যারালাল কংক্রিটের সেতু করে দেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হামিদুল ইসলাম। তিনি আরো জানান, ইতিমধ্যেই ১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে মেইটেনেইন্সের আন্ডারে পিএমপি পাশ হয়েছে। অচিরেই টেন্ডার আহ্বান করা হবে।
জানা যায়, নেত্রকোনা থেকে মদন উপজেলা পর্যন্ত রয়েছে ৩২ কিলোমিটার সড়ক। আর এই সড়ক দিয়ে জেলার হাওর উপজেলা মদন, খালিয়াজুরী ও সিলেটের শাল্লা, ধিরাই, সুনামগঞ্জ,কিশোরগঞ্জের ইটনা মিটামইনসহ বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষ যাতায়াত করে।
বর্তমানে সেতুটিতে ৫ টন ওজনের অধিক যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা লিখা সাইনবোর্ড ঝুলানো থাকলেও চলাচল করছে ২৫ থেকে ৩০ টনেরও বেশি ভারী যানবাহন। এতে কিছু দিন পরপর পাটাতন ভেঙে সরাসরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই