পার্বত্যাঞ্চলে বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ বাকে বসানো হয়েছে সোলার প্যানেল। পাহাড়ের আকাঁ-বাকাঁ পথে রাতের আধারে জ্বলছে বাতি। কমছে সড়ক দুর্ঘটনা। একটা সময় যেসব পাহাড়ি সড়কে প্রায় প্রতিদিন ঘটতো ছোট বড় দুর্ঘটনা। সম্প্রতি সোলার প্যানেল স্থাপনের পর কমে এসেছে দুর্ঘটনা। এতে সন্তোষ প্রকাশ করছেন স্থানীয়রাও।
সংশ্লিষ্টরা সূত্রে জানা গেছে, রাঙামাটি প্রবেশ মুখ থেকে প্রায় ১৩ কিলোমিটার সড়কের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বসানো হয়েছে এসব সোলার প্যানেল। তাই রাতের আঁধারে আলোয় আলোকিত থাকে এসব সড়ক। সড়কগুলো আলোকিত থাকার কারণে দূর পাল্লার বাসগুলো এখন আর নিয়ন্ত্রণ হারায় না পাহাড়ি বাকে। সুবিধা বেড়েছে দূর-দূরান্ত থেকে আগত পর্যটকদেরও। কারণ শীত মৌসূম শুরু হওয়ার পরে রাঙামাটিতে যেমন বেড়েছে পর্যটকদের আনাগোনা। তেমনি বেড়েছে গাড়ির বহরও। পাহাড়ের আকা-বাকা পথে গাড়ি চালাতে গিয়ে প্রায় সময় নিয়ন্ত্রণ হারাতো চালকরা। কিন্তু সড়ক বাতি থাকার কারণে তা কমে এসেছে।
স্থানীয় ট্রাক চালক মো. রাসেল আহমেদ বলেন, পাহাড়ি এলাকা হওয়ার কারণে রাঙামাটি সড়কগুলো খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। সব সময় সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। এখন সোলার প্যানেল বসানোর কারণে দূরের গাড়ি সহজে নজরে পরে। গাড়ি চালাতে সুবিধা হয়।
একই কথা জানালেন মোটরসাইকেল চালক সুজয় চাকমা। তিনি বলেন, সড়ক বাতি থাকার কারণে মোটর সাইকের দুর্ঘটনা কমছে। কারণ পাহাড়ে বেশিরভাগ মানুষ মোটরসাইকেলের উপর নির্ভরশীল। নিয়ন্ত্রণহীন গাড়ি চালানো অভ্যাস আছে উঠতি বয়সের ছেলেদের। যার কারণে অন্ধকারে দুর্ঘটনা ঘটে বেশি। সড়ক বাতিগুলো সচল থাকলে আর দুর্ঘটনা ঘটবে না।
এব্যাপারে রাঙামাটি সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. শহীদুজ্জামান রোমান জানান, রাঙামাটির পাহাড়ি বাঁকগুলোতে সোলার সড়ক বাতি বসানোর স্থানীয়দের দাবি দীর্ঘদিনের। তাই রাঙামাটির সংসদ সদস্য ও খাদ্য মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদার রাঙামাটি-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সড়ক বাতি স্থাপনে বিশেষ উদ্যোগ নেন। বরাদ্দ দেন রাঙামাটি উপজেলা সদরে। তারই আওতায় রাঙামাটির মহা-সড়কসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে সোলার প্যানেলের মাধ্যমে সড়ক বাতি বসানো হয়েছে। রাঙামাটি-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সাপছড়ির শালবন এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ সড়কে সোলার বাতি স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া আসামবস্তি-কাপ্তাই সড়কেও এ সোলার প্যানেলের বাতি বসানো হয়েছে। সারাদিন সূর্যের আলোতে বিদ্যুৎ সঞ্চয় করে রাতে আলোয়-আলোকিত করে পাহাড়। রাঙামাটি-চট্টগ্রাম সড়ক ও আসামবস্তি-কাপ্তাই সড়ক মিলে এ পর্যন্ত ৩০টি সোলার প্যানেলে বাতি বসানো হয়েছে।
তবে স্থানীরা বলছে, মাত্র ৩০টি বাতি পাহাড়ের বিশাল সড়কের জন্য খুবই সামান্য। রাঙামাটি-চট্টগ্রাম, রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি-কাপ্তাই সড়কে বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ বাক আছে, যেখানো প্রতিনিয়ত সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে রাতের আধারে। সেখানে পর্যপ্ত সোলার প্যানেলে সড়ক বাতি স্থাপনের দাবি জানান তারা।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন