নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার এসব সড়ক এখন তরমুজের বাজারে পরিণত হয়েছে। শুধু এই সড়কেই নয় উপজেলার চরকাদহ, দাদুয়া, উদবাড়িয়া, ধারাবারিষা, সিধুলী, চলনালী, সোনাবাজু, বিন্যাবাড়ি ঝাউপাড়া এলাকায় বাড়ির সামনে কিংবা মোড়ে মোড়ে এসব বাঙ্গি তরমুজের হাট বসেছে। বিভিন্ন এলাকার পাইকাররা এসে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। গতবারের চেয়ে এবার চাহিদা বেশি থাকায় কৃষকরা দাম ভালো পেলেও, খরায় ফলন ভালো না হওয়ায় তেমন পোষাচ্ছে না বলে কৃষকরা জানান।
মহাসড়কে দেখা গেছে, সিরাজগঞ্জ থেকে রাজশাহী যাওয়ার পথে আব্দুর রশিদ মাস্টার একটি তরমুজ কিনেন ৩০০ টাকায়। বনপাড়ার জাহাঙ্গীর নামের আরেক ব্যক্তি কিনলেন ৩৩৫ টাকায়। অপেক্ষাকৃত ছোট আরেকটি তরমুজ একজনকে ১৯০ টাকা দিয়ে কিনতে দেখা যায়। এতে ক্রেতারা ঠকাজেতা মনে করছেন না।
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর থেকে আশা পাইকারি ব্যবসায়ী হাসেম আলী ও চন্দন মিয়া জানান, রমজান মাসে ইফতারিতে তরমুজের ব্যাপক চাহিদা থাকায় এখানে তরমুজ কিনতে এসেছি। ১০০ তরমুজ ১৭০০ টাকায় কিনেন তারা। এলাকায় তারা ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করবেন। এতে তারা লাভবান হবেন।
অপরদিকে কৃষকের কাছ থেকে তরমুজ পাইকারি কিনলেও হাটবাজারে বিক্রি হচ্ছে কেজি দরে। ৫৫ টাকা কেজি হওয়ায় সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে গেছে তরমুজের দাম। তাই ইফতারিতে ইচ্ছা থাকলেও অভাবী মানুষরা তরমুজ কিনে খেতে পারছেন না।
ধারাবারিষার কৃষক আব্দুল লতিফ, শাহিন হোসেন, সোনাবাজু গ্রামের কৃষক মোতাহার জানান, রসুনের গাছ বড় হওয়ার পর গাছের ফাঁকে ফাঁকে বাঙ্গি, তরমুজ ও মিষ্টি কুমড়ার বীজ লাগাতে হয়। এ ফসলের জন্য বাড়তি সার ও কীটনাশক লাগে না। এ বছর বাঙ্গি ও তরমুজের ফলন ভালো হয়েছে। বাঙ্গি তুলতে শ্রমিকদের ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত মজুরি দিতে হচ্ছে। তবে রমজান মাসে বাজারে এসব ফলের চাহিদা থাকায় দামও ভালো পাচ্ছি। তাতে রসুনের চাষে লোকসান হলেও এসব ফসলে আমরা লাভবান হচ্ছি।
উপজেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, এ বছর গুরুদাসপুরে বাঙ্গি ৭২০ হেক্টর, তরমুজ ৫৫৫ হেক্টর ও মিষ্টি কুমড়া ২৫ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। খরায় ফসলের ফলন ভালো হওয়ায় বাঙ্গিতে ২২ হাজার টন, তরমুজ ২৩ হাজার টন ও মিষ্টি কুমড়ায় ১৭৫ টন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ধরা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ