দিনাজপুরের বিস্তৃত এলাকা জুড়ে ফসলের মাঠে এখন সোনালী ফসলের দোলখেলা। আর মাঠ জুড়ে বোরো ধান কেটে ঘরে তুলতে ব্যস্ত চাষিরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর জেলায় বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে ধানের ন্যায্য মূল্য পাওয়া নিয়ে সংশয়ে রয়েছে চাষিরা। পাশাপাশি ধান কাটার শ্রমিক নিয়ে বেশ ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে চাষিদের। আবার সময় ও শ্রমিক সংকট মোকাবেলায় অনেক জমিতে কৃষি শ্রমিকের পরিবর্তে ধান কাটার কাজ ব্যবহৃত হচ্ছে অত্যাধুনিক হারভেস্টার মেশিন।
ঘোড়াঘাট উপজেলায় দেখা যায়, আগাম সময়ে যারা বোরো ধান রোপন করেছে, সেই সব চাষিরা ধান কাটা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছে। অনেকে আবার জমিতে কেটে রাখা ধান ঘরে তোলা নিয়ে ব্যস্ত। অনেকে জমিতে দেরি করে ধান রোপন করায়, তাদের সেই সব জমির ধান কাটতে সময় লাগবে আরও ২-৩ সপ্তাহ।
এদিকে, চাষিরা বলছেন, হারভেস্টার মেশিন দিয়ে খুবই অল্প সময়ে শত শত বিঘা জমির ধান কাটা সম্ভব হচ্ছে। পাশাপাশি কৃষি শ্রমিকের চেয়ে অনেক কম দামে ধান কাটা সম্ভব হচ্ছে এই মেশিনের সাহায্যে। কৃষি শ্রমিকের মাধ্যমে প্রতি বিঘা জমির ধান কাটতে খরচ ৫-৬ হাজার টাকা। অপরদিকে হারভেস্টার মেশিনের সাহায্যে প্রতি বিঘা জমির ধান কাটতে খরচ মাত্র ৩ হাজার টাকা। এছাড়াও অত্যাধুনিক হারভেস্টার মেশিনের সাহায্য ধান কাটলে ধান মাড়াই করার আর কোনও ঝামেলা থাকছে না।
ঘোড়াঘাটের কৃষক শফিকুল ইসলাম বলেন, চলতি মৌসুমে আমি ৬ বিঘা জমিতে বোরো ধানের চাষ করেছি। আশা করা যায় প্রতি বিঘায় ২৫-৩০ মণ ধান উৎপাদন হবে। ইতোমধ্যে প্রায় অর্ধেক জমির ধান কেটেছি।
নয়াপাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল খালেক বলেন, ধানের ফলন ভালো হয়েছে। তবে ন্যায্য মূল্যে ধান বিক্রি করার সুযোগ পেলে, আমরা সার্থক।
ঘোড়াঘাট উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, এ বছর ঘোড়াঘাট উপজেলায় ১২ হাজার ১৯৮ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তবে চলতি মৌসুমে চাষ হয়েছে ৯ হাজার ২৩৩ হেক্টর জমিতে। পাশাপাশি বোরো ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫৮ হাজার ৪৪৩ মেট্রিক টন।
ঘোড়াঘাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইখলাছ হোসেন সরকার জানান, আবহাওয়াসহ বিভিন্ন কারণে এই উপজেলা কৃষি কাজের জন্য বেশ উপযোগী। এই উপজেলার ধান এবং ভুট্টা তুলনামূলক বেশি আবাদ হয়। আশা করা যায় এই বছর বোরো ধান চাষিরা ফলন ও দামে বেশ লাভবান হবে।
বিডি প্রতিদিন/আল আমীন