লক্ষ্মীপুরে শহর ও গ্রামে অন্তত অর্ধশত পশুর হাটে এখন হাজারো মানুষের উপচেপড়া ভিড়। ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে মানুষ। এদিকে ক্রেতাদের অভিযোগ ব্যাপারীদের সিন্ডিকেটে পশুর দাম অনেক বেশি চাওয়া হচ্ছে। তবে বিক্রেতারা বলছেন বিক্রি একেবারেই কম, বেশির ভাগ মানুষ ঘুরপাক খাচ্ছে। অন্যদিকে অবৈধ হাটের দৌরাত্বে এমন পরিস্থিতি বললেন বাজার ব্যবস্থাপকরা। স্থানীয় প্রশাসন বলছেন স্বাস্থ্যবিধি মানাতে মনিটরিং টিম কাজ করছে। অবৈধ হাট বন্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছেন তারা।
সরেজমিন লক্ষ্মীপুর জেলার সবচাইতে বড় পশুর হাট ঘুরে দেখা যায়, পশুর হাটে শত শত মানুষ, কারো মুখে মাস্ক আছে কারো আছে থুতলিতে কেউ খালি মুখে ঘুরাফেরা করছেন। করোনা সংক্রমণ ঠেকানোর কঠোর লকডাউন শেষে বৃহস্পতিবারের শিথিল লকডাউনে এমনিভাবে হাজারো মানুষের ভিড়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন বহু মানুষ। স্বাস্থ্যবিধি মানার বাধ্যবাধকতায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। তবুও অনেকেই তা মানছেন না। এসেছে ঈদুল আজহা, আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সামর্থবানদের কোরবানি দিতে হবে। আর কোরবানির ঈদের অন্যতম প্রধান উপাদান হিসেবে এ অঞ্চলে গরুর চাহিদাই বেশি। পছন্দের গরু, ছাগল কিনতেই এমন জটলা বলে জানান স্থানীয়রা। এখানকার ক্রেতারা বলছেন, আগের বারের তুলনায় গরু প্রতি ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা বেশি চাইছেন ব্যাপারীরা। সিন্ডিকেট করে গরুর দাম বেশি চাওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন কেউ কেউ। তাই অনেকে ঘুরপাক খাচ্ছেন বাজারে। হতাশায় ভুগছেন বলে জানান কেউ কেউ। আবার কেউ গরু কিনে বাড়ি ফিরতেও দেখা গেছে।
ব্যাপারীরা বলছেন, যশোর, খুলনা, নোয়াখালীসহ বিভিন্ন জেলা থেকে কিনে আনা ৬০ হাজার থেকে ২ লাখ ২০ হাজার টাকা মূল্যের গরু তাদের সংগ্রহে রয়েছে। ৫০ থেকে ৬০টি গরু বাজারে এনে ২-৩টি গরু বিক্রি করেছেন তারা। করোনার কারণে বাজারে ক্রেতা কম বলে মত প্রকাশ করেন তারা।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুধু এ হাট নয় এমন অবস্থা জেলার রায়পুরের হায়দারগঞ্জ বাজার, রামগতির বিবির হাট, কমলনগরের তোরাবগঞ্জ বাজার ও রামগঞ্জের সোনাপুরসহ বিভিন্ন গ্রামে বসা অন্তত অর্ধশত পশুর হাটেও। তবে এবার দেশী গরুর দখলে রয়েছে বাজার। ইন্ডিয়ান কিংবা মিয়ানমারের গরু তেমন নেই বললেই চলে।
এমন পরিস্থিতিতে বৈধ অবৈধ বাজার নিয়ে প্রশ্ন তুলেন লক্ষ্মীপুর পৌর গরু বাজারের ইজারাদার কাউন্সিলর শাহী। যত্রতত্র পশুর হাট ও চোরাই পথে অবৈধ বাজার গুলোতে গরু আসছে জানিয়ে গরুর দাম নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
তবে স্থানীয় প্রশাসনের তথ্যমতে জেলায় বৈধ হাট রয়েছে ৯টি।
জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মো. আনোয়ার হোছাইন আকন্দ বলেন, সকল বৈধ হাটে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে প্রশাসনিক মনিটরিং টিম রয়েছে। প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার নির্দেশ রয়েছে। অবৈধ কোন হাট বসতে দেয়া হবে না বলে জানান তিনি।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন