বরগুনার পাথরঘাটায় ক্লিনিকের ম্যানেজার মনিরুজ্জামানের চিকিৎসায় এক দিন বয়সী নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ করেছেন ওই নবজাতকের এক আত্মীয় খসরু মিয়া। মঙ্গলবার (১০ মে) বিকেল ৫টার দিকে উপজেলার হাসপাতাল সড়কের পাথরঘাটা সৌদি প্রবাসী ক্লিনিকে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় স্থানীয়ভাবে সমাধানের চেষ্টা চলছে বলেও জানা গেছে। নবজাতক উপজেলার পাথরঘাটা সদর ইউনিয়নের রুহিতা এলাকার সৌদি প্রবাসী মো: আবুসালের সন্তান।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, সোমবার সকালে সিজারিয়ান (অস্ত্রোপচার)-এর মাধ্যমে পাথরঘাটা সৌদি প্রবাসী ক্লিনিকে নবজাতকের জন্ম হয়। অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসক মো: বশির আহমেদ। এরপরে ওই চিকিৎসক কোনো চিকিৎসা না দিয়েই চলে যান। এর কিছুক্ষন পরে ম্যানেজার মনিরুজ্জামান ব্যাবস্থাপত্র লিখে নবজাতক ও তার মায়ের চিকিৎসা দেন। নবজাতককে অক্সিজেন লাগান তিনি। পরে মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নবজাতককে স্যালইন দেয়ার জন্য অক্সিজেন খুলে প্রায় আধা ঘণ্টা রেখে দেন মনিরুজ্জামান। পরে কেনুলা পরানোর চেষ্টা করেন তিনি। এর কিছুক্ষনের মধ্যেই ওই শিশুর মৃত্যু হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই ক্লিনিকের এক কর্মচারী জানান, মূলত আমাদের এখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে থাকেন ম্যানেজার। আমাদের ধারণা এই নবজাতকের অক্সিজেন খুলে রাখার জন্যই তার মৃত্যু হয়েছে। যখন নবজাতকের অবস্থা খারাপ হয়েছে তখন বশির স্যারকে বলা উচিৎ ছিল। তা না করে তিনিই চিকিৎসা দেয়ার চেষ্টা করেন।
ওই শিশুর ফুপা খসরু মিয়া জানান, আমার শ্যালকের স্ত্রী মারিয়া আক্তারের ব্যাথা শুরু হলে তার চিকিৎসার জন্য পাথরঘাটা সৌদি প্রবাসী ক্লিনিকে নিয়ে আসি। কিছুক্ষণের মধ্যেই ম্যানেজার মনির জানান, মারিয়ার সিজার করানো লাগবে। এরপর সিজার করালে অসুস্থ নবজাতককে ইনকিউবেটরে রেখে দ্রুত বিল দিতে বলেন।
তিনি আরও বলেন, এসময় বিল দিতে দেরি হওয়াতে তিনি আমার সাথে দুর্ব্যবহার শুরু করেন। পরে আমি টাকা দিয়ে দেই। বাচ্চা অসুস্থ হলে ম্যানেজারই তার চিকিৎসা দেন। ক্লিনিকে চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা দেয়ার জন্য নিয়ে আসলে যদি ম্যানেজার চিকিৎসা দেন এটা কেমন ক্লিনিক? আমরা এর প্রতিকার চাই, আমাদের শিশুর মতো যেন এরকম আর না হয়, প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
এ বিষয়ে পাথরঘাটা সৌদি প্রবাসী ক্লিনিকের ম্যানেজারের কাছে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। ক্লিনিকের পার্টনার নিরু খান জানান, ওই শিশুর শ্বাসকষ্ট ছিল। তাই তার মৃত্যু হয়েছে।
এ বিষয়ে বরগুনা জেলা সিভিল সার্জন ডা: মো: ফজলুল হক জানান, এরকম ঘটনার কথা আমি এখন পর্যন্ত শুনিনি। ভুক্তভোগী আভিযোগ দিলে ব্যাবস্থা নেয়া হবে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ