পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলায় বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এক কিশোরীকে গণধর্ষণের মামলার প্রধান আসামি প্রতারক প্রেমিক হাসান আলীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনার প্রায় ২০ দিন পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকাগামী একটি বাস থেকে ঢাকা যাওয়ার সময় জেমজুট এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
আটোয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোহেল রানা বলেন, গণধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি হাসানকে গ্রেফতার করা হয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। শুক্রবার তাকে আদালতে হাজির করা হবে।
এনিয়ে এই মামলার এজাহারভুক্ত তিন আসামিকে গ্রেফতার করলো পুলিশ। ঘটনার পরদিন গ্রেফতার হওয়া রাজু ও সাইফুল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিলে আদালত তাদের কারাগারে প্রেরণ করেন।
এর আগে, গত ৬ আগস্ট দিবাগত রাতে জেলার আটোয়ারী উপজেলার পুরাতন আটোয়ারী এলাকার বন্দরপাড়া গ্রামের একটি চা বাগানে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ধর্ষণের শিকার কিশোরীর বাড়ি জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলায়। প্রায় চারদিন পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর আদালতে জবানবন্দী দেওয়ার পর নিজ বাড়িতে ফিরে যায় সে। ওই কিশোরী স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী।
ধর্ষণের অভিযুক্তরা হলেন-আটোয়ারী উপজেলার পুরাতন আটোয়ারীর মালগোবা গ্রামের মৃত আমিবার রহমানের ছেলে প্রেমিক হাসান (২৫), একই এলাকার ফতেহপুর গ্রামের খামির উদ্দিনের ছেলে মো. সবুজ (৩০), আব্দুল রহমানের ছেলে আমিনুল ইসলাম ওরফে ডিপজল (২৫), খাজিম উদ্দিনের ছেলে নজরুল ইসলাম (৪০), কৈলাসর ছেলে অমর (৩০) ও একই এলাকার আব্দুর রহমান (৪০)।
জানা গেছে, মোবাইল ফোনে প্রেমের সম্পর্ক হয় কিশোরীর। একপর্যায়ে হাসানের সাথে গভীর সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে সে। গত ৬ আগস্ট সকাল ১০টায় ওই কিশোরী বাড়ি থেকে বের হয়ে স্কুলে যায়। এর মধ্যে ওই কিশোরীকে মোবাইলে কল করে বিয়ে করার কথা বলে তেঁতুলিয়া থেকে পঞ্চগড়ে নিয়ে যায় প্রেমিক হাসান। বিকেলে পঞ্চগড় পৌঁছালে কাজী অফিসে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে রাত আটটার দিকে আটোয়ারী উপজেলার পুরাতন আটোয়ারী এলাকার বন্দরপাড়া গ্রামে সড়কের পাশে চা বাগানে নিয়ে যায়। সেখানে প্রথমে প্রেমিক হাসান ও তার বন্ধু সবুজ কিশোরীকে ধর্ষণ করেন। এসময় তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে ধামোর ইউনিয়নের আরও কয়েকজন সেখানে উপস্থিত হলে হাসান ও সবুজ ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। কিশোরীকে একা পেয়ে তারাও ধর্ষণ করে।
একপর্যায়ে কিশোরীকে ফেলে তারা সবাই পালিয়ে যায়। পরে এক পথচারী কিশোরীকে অসুস্থ অবস্থায় দেখে তাকে উদ্ধার করে। পরে কিশোরীর পরিবারকে বিষয়টি জানানো হলে তারা এসে ভোর রাতে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে তাকে ভর্তি করে।
এ বিষয়ে পঞ্চগড় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইউসুফ আলী বলেন, এ ঘটনায় ধর্ষণের দায়ে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের অভিযান শুরু হয়েছে। এর মধ্যে আজ (বৃহস্পতিবার) প্রধান আসামিসহ মোট তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই