মশার যন্ত্রণায় এখন অতিষ্ঠ ঝালকাঠি পৌরবাসী। শহরের বিভিন্ন জায়গায় ময়লা আবর্জনার স্তুপ থাকায় মশার বংশ বিস্তার পাচ্ছে গাণিতিক হারে। শহরবাসীর অভিযোগ, মশার বংশ বিস্তার রোধ করাসহ মশা মারার কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই ঝালকাঠি পৌরসভা কর্তৃপক্ষের। প্রত্যেক অর্থ বছরে লাখ লাখ টাকার বিল তুললেও সমাধান নেই। নামকাওয়াস্তে কালে ভদ্রে বিশেষ সময় দেখা যায় তাদের কার্যক্রম। কিছু সময় ঔষধ দিয়েই যেন তারা হাওয়া হয়ে যায়। সাধারণ মানুষ বলছেন এটা যেন তাদের বাজেট লোপাটের আইওয়াশ মাত্র। এ অবস্থায় চরম অসস্থিতে দিন কাটাচ্ছে ঝালকাঠি শহরের মানুষ।
তবে পৌর কর্তৃপক্ষ বলছেন মশা নিধনের জন্য তাদের ২টি টিম প্রতিদিনই মশার ওষুধ ছিটাচ্ছে। বর্তমানে ৩টি ফগার মেশিন নষ্ট থাকায় কাজে সমস্যা হচ্ছে। এগুলো মেরামত হয়ে আসলে প্রতিটি ওয়ার্ডেই আরো ভালোভাবে মশার ওষুধ ছিটানো যাবে।
১৮৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত ঝালকাঠি পৌরসভা একটি প্রথম শ্রেনি পৌরসভা হলেও পৌরসভার ময়লা আবর্জনা অপসারণের ব্যবস্থা খুবই নাজুক। শহরের যত্রতত্র দেখা যায় ময়লা আবর্জনার স্তুপ। এছাড়া ড্রেনগুলোও নিয়মিত পরিস্কার করা হয় না। প্রতিদিন খুব সকালেই ড্রেন থেকে ময়লা তুলে পাশেই রাখা হচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। দুপুরে দিকে সে ময়লা সরিয়ে নেওয়া হলেও সেখান থেকে দুর্গন্ধের সাথে ছড়াচ্ছে নানা প্রানঘাতি জীবাণু।
এরপর দখল দুষণের কবলে পরা শহরের খালগুলোর অবস্থা আরও খারাপ। মাসের পর মাস ময়লা জমে থাকায় একেকটি খাল যেন ময়লার ভাগাড়। মশা জন্ম নেওয়ার উৎকৃষ্ট স্থান হচ্ছে এসব খাল। নামে মাত্র খাল থেকে ময়লা অপসারণ করা হলেও খালেই থেকে যাচ্ছে ময়লা আবর্জনা। মশার যন্ত্রনায় ঝালকাঠি পৌর শহরের মানুষ এখন অতিষ্ঠ। ঝালকাঠি শহরে সন্ধ্যার পরে বিভিন্ন বাসাবাড়ী ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কয়েল জ্বালিয়ে, মশার স্প্রে দিয়ে বা ইলেক্ট্রনিক ব্যাট দিয়ে মশা মারার দৃশ্য এখন প্রতিদিনের। এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ ঝালকাঠি পৌরসভা কর্তৃপক্ষ মশা মারার তেমন কোন উদ্যোগ নিচ্ছে না। মশার উৎপাতে দিনের বেলাও কোন কোন এলাকায় মশারি টাঙিয়ে থাকতে হয়। এছাড়া যেসব জায়গায় মশার জন্ম হয়। সেই আবজর্ননার স্তুপগুলো নিয়মিত অপসারণ করছে না পৌরসভা। যার কারণে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পৌরবাসীর।
ঝালকাঠি পৌরসভা সূত্র জানায়, মশা মারা জন্য পৌরসভায় ৬টি ফগার মেশিন রয়েছে। এর মধ্যে ৩ টিই নষ্ট। এগুলো মেরামতের জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। এছাড়া গত অর্থ বছরে “ওষুধপত্র, মশক ও কুকুর নিয়ন্ত্রন” খাতে পৌরসভার বাজেট বরাদ্দ ছিল ৩০ লাখ টাকা। এদিকে মশার বংশ বিস্তার রোধ করার জন্য পৌরসভার বিভিন্ন জায়গায় থাকা ময়লার স্তুপ নিয়মিত অপসারণ এবং পৌরসভার ড্রেনগুলো নিয়মিত পরিস্কার করা জরুরী বলে মনে করেন স্থানীয়রা। তারা পৌর শহরের ময়লা আবর্জনা অপসারণ ও প্রতিটি ওয়ার্ডে নিয়মিত মশার ওষুধ ছিটানোরও দাবি জানিয়েছেন।
ঝালকাঠি পৌরসভার সচিব শাহীন সুলতানা জানান, মশা মারার জন্য প্রতিদিনই মশার ওষুধ ছিঁটানো হচ্ছে। তবে ৬টি ফগার মেশিনের মধ্যে ৩টি ফগার মেশিন অকোজো থাকায় কাজে সমস্যা হচ্ছে। এগুলো মেরামত হয়ে গেলে আরও ভালোভাবে পৌরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডেই মশা মারার ওষুধ ছিটোনো যাবে। খালগুলোতে সামান্য কাজ হয় তবে ব্যাপকভাবে খাল খনন করতে ইতোমধ্যেই আমরা পৌরসভা থেকে উদ্যোগ হাতে নিয়েছি।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল