বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় বিএনপি-জামায়াতের ডাকা টানা তিনদিনের অবরোধের প্রভাব পড়েছে ২০০ বছরের প্রাচীন দুধের বাজারে। দূরপাল্লার যান চলাচল বন্ধ থাকায় দইসহ রকমারি মিষ্টান্ন সামগ্রী তৈরির কারখানাগুলোতে উৎপাদন একেবারেই কমে গেছে। এই অবস্থায় স্থানীয় বাজারে দুধের দাম কেজি প্রতি অর্ধেকে নেমেছে। ফলে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছেন খামারিরা।
বুধবার অবরোধের দ্বিতীয় দিনে শহরের রেজিস্ট্রি অফিস ও পৌর শিশু পার্কে গড়ে ওঠা ঐতিহ্যবাহী দুধের বাজার ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া যায়।
জানা যায়, এই উপজেলার ২০০ বছরের পুরনো ঐতিহ্যবাহী এ দুধের বাজারে গড়ে প্রতিদিন ৪০০ মণের অধিক দুধ বিক্রি হয়। শেরপুর, ধুনট, নন্দীগ্রাম এমনকি সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর, পাবনার উল্লাপাড়া থেকেও খামারি ও ছোট-বড় ব্যবসায়ীরা নিয়মিত এখানে দুধ বিক্রি করতে আসেন।স্থানীয়রা জানান, এ উপজেলায় ছোট-বড় তিন শতাধিক দই ও মিষ্টির কারখানা রয়েছে। শেরপুরে অন্তত ২৫-৩০টি কারখানায় প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে দই তৈরি করা হয়। রয়েছে বড় ধরনের বেশ কয়েকটি হোটেলও। এছাড়া স্পেশাল, সাধারণ, পাতলা দইয়ের জন্য খ্যাত এ উপজেলা। পাশাপাশি তৈরি করা হয় নানা ধরনের মিষ্টান্ন সামগ্রী। যা চলে যায় দেশের বিভিন্ন স্থানে। এসব কারণে এই উপজেলায় প্রতিদিন বিপুল পরিমাণে দুধের চাহিদা রয়েছে। সে হিসেবে বিক্রেতা, ব্যাপারী ও খামারিরা দুধের আমদানি করে থাকেন। অন্য বাজারের চেয়ে এখানে দামও ভাল পান তারা। কিন্তু টানা অবরোধের কারণে বিগত দুইদিন ধরে দুধের বাজার পড়ে গেছে।
দুধ বিক্রেতা আব্দুল মান্নান জানান, অবরোধের কারণে দই ও মিষ্টির ব্যবসায়ীরা উৎপাদন অনেক কমিয়ে দিয়েছেন। আগের মতো আর দুধ কিনছেন না তারা। গত সোমবার প্রতি কেজি দুধ ৬০-৬৫ টাকা দরে বিক্রি করেছেন। কিন্তু মঙ্গলবার থেকে অবরোধ শুরু হওয়ায় একই দুধ দামে বাজারে প্রায় অর্ধেকে নেমে আসে। বুধবার সকালের দিকে ২৫-৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছেন তিনি।
খামারি আলমগীর হোসেন স্বপন বলেন, বাজারে সব পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখি। বিশেষ করে পশু খাদ্যের দাম বেড়েছে অস্বাভাবিক। এমন পরিস্থিতে দুধের বাজারে ধ্স নামায় চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন। এমনকি এখন টিকে থাকাই দায়। তাই এই অবস্থা থেকে দ্রুত সমাধান চান তিনি।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল