১২ মে, ২০২৪ ১৬:২৪

নালিতাবাড়ীতে হাতির আতঙ্কে ধান নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষকরা

নালিতাবাড়ী প্রতিনিধি

নালিতাবাড়ীতে হাতির আতঙ্কে ধান নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষকরা

'লেঙ্গুর (লেজকাটা) ছাড়া কানা আত্তিডা (হাতি) একলাই আগে ক্ষেতে নাইম্মা অন্যডিরে ডাকে, পরে অন্য আত্তিগুলা আইয়া ধান খাওয়া শুরু করে। ১০ কাডা জমিতে ধান লাগাইছিলাম, এই আত্তির অত্যাচারে ঠিকমতো পাকে নাই। এই ধানগুলা রাইতে দিনে কামলা নিয়া কাটলাম। ' শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নের পানিহাটা গ্রামের মো. জয়নাল আবেদিন (৬৫) আক্ষেপ নিয়ে এ কথাগুলো বলেন।

এলাকাবাসী জানায়, সীমান্ত এলাকায় পাহাড়ে প্রায় ১৫ দিন ধরে অবস্থান করছে ৭০-৮০ হাতির একটি দল। হাতির দলটি কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে যেখানে ধান আছে সেখানেই রাত আর দিন নেই, সুযোগ বুঝে ধান ক্ষেতে নেমে পড়ছে। এলাকার লোকজন হৈ হুল্লর করে হাতিদের জঙ্গলে তাড়িয়ে দিচ্ছে। এভাবেই প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করে সীমান্তবাসী ধান রক্ষা করে যাচ্ছেন। 

নিবার পানিহাটা ফেকামারী এলাকায় প্রায় ১০০ একর জমির ধান কাটা শেষ পর্যায়ে। সর্বশেষ মো. সবেদ আলীর ১৫ কাঠা জমি ৫-৬ জন শ্রমিক নিয়ে ধান কাটছেন। এ সময় একটি হাতি পাহাড় থেকে নেমে আসছিলো। এলাকার লোকজন হৈ-হুল্লর করে হাতিটিকে তাড়িয়ে দেয়। হাতিটি জঙ্গলে চলে যায়। 

পানিহাটা গ্রামের মো. আবদুস সালাম (২৬) বলেন, আমি ৫ কাডা জমিতে বোর ধান লাগাইছিলাম। এই আত্তির অত্যাচারে গতকাল রাইতে কয়েকজন লোক নিয়ে কাটাইছি। আত্তি রাইতে কয়েকবার খেতে নামতে চাইছিলো, মশাল জ্বালিয়ে আমরা খেদাইয়া দেই। 

ময়মনসিংহ বন বিভাগের মধুটিলা ফরেস্টের রেঞ্জ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, চলতি বছরে হাতির আক্রমণে তিনজন নিহত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত ১৫ টি আবেদন পেয়েছি। আরো আবেদন আসবে। এতে প্রায় ১০-১২ একর জমির ধান ক্ষতি হয়েছে। সবগুলো আবেদন পেলে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সরকারিভাবে অনুদান দেওয়া হবে।

বন বিভাগের তথ্যমতে, ২০১৪ সাল থেকে এক দশকে শুধু গারো পাহাড়ে হাতির আক্রমণে ৩৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন দুই শতাধিক। একই সময়ে মানুষের হামলাসহ নানা কারণে ৩০টি হাতি মারা গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ফসল। 

বিডি প্রতিদিন/হিমেল

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর