বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম মহাসডকসহ সিরাজগঞ্জের সকল রোডে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। আগের মতই গণপরিবহন, ট্রাক ও লরি কাভার্ডভ্যানসহ পণ্যবাহী পরিবহন চলছে। তবে এখনও পুলিশ দায়িত্বে না ফেরায় সড়ক-মহাসড়কে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছে ছাত্র, স্কাউট সদস্য, বিএনসিসি গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী ও ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা। অন্যদিকে এদিকে জেলা শহরসহ উপজেলা পর্যায়ের জনমানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। এদিকে বিএনপির পক্ষ থেকে সহিংসতা ও ভাঙচুররোধে পাড়ায় মহল্লায় মিটিং-মাইকিং করে জনগণকে নিরাপদে থাকার আশ্বস্ত করছেন। বিএনপির কেউ সহিংসতা করলে সঙ্গে সঙ্গে দলের নেতাদের এবং দুবৃর্ত্তরা কেউ সহিংসতা করলে ধরে প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু। এমনকি গত ৪ দিন ধরে তিনি প্রতিটি মহল্লায় গিয়ে নিজে মাইকিং ও সমাবেশ করে এলাকাগুলো শান্ত করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শুক্রবার সকাল থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম মহাসড়ক পর্যাপ্ত যানবাহন চলাচল করে। ঢাকামুখী লেনে পণ্য ও যাত্রীবাহী পরিবহন স্বাভাবিকভাবে চলাচল করে। আঞ্চলিক সড়কগুলোতেও যান চলাচল স্বাভাবিক দেখা যায়। মহাসড়কের কড্ডার মোড়, হাটিকুমরুল গোলচত্ত্বর এলাকায় বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়। এছাড়াও শহরের বিভিন্ন মোড়ে, সড়ক ও মহাসড়কে রোভার স্কাউটস, বিএনসিসি, গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী ও ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও সেনা সদস্যরা মাঠে থেকে আইন শৃংখলা স্বাভাবিক রাখতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
সিরাজগঞ্জ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আঞ্জারুল ইসলাম ও মুন্তাসির জানান, আমরা দেশটাকে নতুনভাবে গড়তে চাই। সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছি। আমাদের শিক্ষার্থীরা কদিন ধরেই শহর পরিষ্কার ও ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছে। কোথাও কোন চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করা হলে বরদাস্ত করা হবে না।
সিরাজগঞ্জ জেলা জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জাহিদুল ইসলাম জানান, আমরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে মন্দিরে মন্দিরে যাচ্ছি। হিন্দুদের সবাইকে আশ্বস্ত করেছি। ব্যবসায়ীদের কাছে যাচ্ছি, মাইকিং করেছে সবাইকে শান্ত থাকার জন্য আহবান জানাচ্ছি। এছাড়াও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড প্রতিরোধে প্রতিটি ইউনিয়নও ওয়ার্ড কমিটি গঠন করা হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু জানান, স্বৈরাচার পদত্যাগের দিন থেকে সিরাজগঞ্জে একশ্রেণীর দুর্বৃত্তরা ভাঙচুর ও লুটপাট শুরু করে। আমি ৫ তারিখ থেকেই থেকেই শহরের বিভিন্ন মসজিদের মাইকে বলেছি লুটপাট থেকে বিরত থাকার জন্য। পুলিশের সাথে কথা বলেছি এবং তাদের সহযোগিতা করার জন্য ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে কমিটি করে দিয়েছি। পরবর্তীতে পরিবহন শ্রমিক ও মালিকদের সাথে কথা বলে সড়কে গাড়ী বের করতে বলেছি। ব্যবসায়ীদের কথা বলে ব্যবসা করতে আহবান জানারের ফলে শহরের সকল দোকানপাট খোলা হয়েছে। তিনি আরো বলেন আমরা মাইকিং করে বলেছি চাঁদাবাজ সন্ত্রাসী কোন দলের নয়। যদি আমাদের দলের কেউ লুট করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর যদি কোন লোকেরা এগুলো করে তার বিররুদ্ধও আমরা ব্যবস্থা নেব। প্রতিদিন হিন্দুদের সাথে মিটিং করছি। কারণ এই আন্দোলন করা হয়েছে পুরো দেশের বৈষম্য দূর করার জন্য। এখন এই দেশে হিন্দু মুসলমান বৌদ্ধ খ্রিস্টান সমভাবে বাস করবে।
সিরাজগঞ্জ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ হান্নান মিয়া জানান, প্রতিটি থানায় পরিদর্শন করা হচ্ছে। সবদলের নেতাদের সাথে কথা বলা হচ্ছে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য। পুলিশ সদস্যের থানায় আসার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। অনেক পুলিশ সদস্য ইতোমধ্যে থানায় যোগদান করেছে। আশা করছি স্বল্প সময়ের মধ্যে থানাগুলোর কার্যক্রম স্বাভাবিক হবে।
বিডি প্রতিদিন/এএ