গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জে বৈদ্যুতিক মিটার চুরির যেন ধুম পড়ে গেছে। চুরির পর চোরের লেখা চিরকুটের বিকাশ নম্বরে গোপনে টাকা পাঠিয়ে মিটার ফেরত নিতে বাধ্য হচ্ছেন ভুক্তভোগীরা। কিন্তু একটি ব্যাংকের উপশাখা টাকা দিয়েও মিটার ফেরত না পেয়ে গোবিন্দগঞ্জ থানা ও পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে অভিযোগ করলে বিষয়টি জানাজানি হয়। এ বিষয়ে থানায় এজাহার দায়ের করেছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ও ভুক্তভোগী গ্রাহক।
জানা গেছে, গত এক সপ্তাহে মহিমাগঞ্জ এলাকার বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, কল-কারখানা ও ব্যাংকের একটি উপশাখাসহ বিভিন্ন গ্রাহকের প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় প্রতিরাতেই একের পর এক থ্রি-ফেজ বৈদ্যুতিক মিটার চুরি যাচ্ছিল। চুরির পর চোরেরা খুলে নেওয়া মিটারের বোর্ডে লিখে রেখে যাচ্ছে টাকা দেওয়ার বিকাশ নম্বরও। নিজ স্বার্থে অনেকটা গোপনেই সেই নম্বরে টাকা পাঠিয়ে অনেকে মিটার ফেরত পাওয়ায় বিষয়টি তেমন সামনে না আসায় প্রতিদিনই চলছে এ চুরির ঘটনা। কিন্তু একটি বাণিজ্যিক ব্যাংকের উপশাখার মিটার চুরির পর টাকা দিয়েও মিটার ফেরত না পাওয়ায় তারা থানায় এজাহার করার পর পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষও অভিযোগ করেছে থানায়।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ নভেম্বর রাতে শাখা ভবনের মিটারটি চুরি হয়। সেখানে লেখা চিরকুটে দেওয়া বিকাশ নম্বরে তাদের সাথে কথার পরিপ্রেক্ষিতে ৬ হাজার টাকা দেওয়া হয়। এই টাকা কম হয়েছে বলে চোরেরা আবার দুই হাজার টাকা বিকাশ করিয়ে নেয়। কিন্তু আট হাজার টাকা পাওয়ার পরও তারা মিটার ফেরত না দিয়ে আরও চার হাজার টাকা চায়।
শুধু তাই নয়, টাকা না দিয়ে নতুন মিটার লাগালে আবারও তা চুরি করবে জানিয়ে হুমকি দেয় বলে অভিযোগে জানানো হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে ব্যাংকের উপশাখা ব্যবস্থাপক গত ১০ নভেম্বর গাইবান্ধা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহিমাগঞ্জ সাব-জোনাল অফিসে ও গোবিন্দগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। ওইদিন একই অভিযোগে গাইবান্ধা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহিমাগঞ্জ সাব-জোনাল অফিসের পক্ষ থেকেও গোবিন্দগঞ্জ থানায় একটি এজাহার দায়ের করা হয়েছে।
গাইবান্ধা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহিমাগঞ্জ সাব-জোনাল অফিসের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার মাহমুদুল ইসলাম বলেন, গত এক সপ্তাহে মহিমাগঞ্জের একটি তেলের মিল, দুটি স’মিল, একটি কেবল টিভি ও ইন্টারনেট সরবরাহ প্রতিষ্ঠান এবং একটি বেসরকারি ব্যাংকের উপশাখার বৈদ্যুতিক মিটার চুরি করেছে ওই চিরকুট চক্র। এর মধ্যে অনেকেই বিকাশে টাকা পাঠিয়ে ফেরত পেয়েছেন তাদের মিটার। অধিকাংশ গ্রাহকই অভিযোগ না করে গোপনে টাকা দিয়ে মিটার ফেরত নেওয়ায় চক্রটির দৌরাত্ম্য দিন দিন বেড়েই চলেছে। এদের হাত থেকে রক্ষা পেতে সচেতনতার পাশাপাশি মিটার সুরক্ষার জন্য বিভিন্ন সতর্কতামূলক পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে গ্রাহকদের।
বিষয়টি নিশ্চিত করে গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বুলবুল ইসলাম বলেন, মিটার চুরির চক্রটিকে ধরতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই