পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে হঠাৎ দরজা ভেঙ্গে একদল ডাকাত ঘরের ভিতর প্রবেশ করায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েন গৃহকর্তা মো. সোবাহান হাওলাদার। পরে অসুস্থ হয়ে পড়লে ডাকাতরাই তাকে সেবা-যত্ন করে পানি পান করিয়ে স্বর্ণালঙ্কার ও টাকা নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তবে ডাকাতরা তাদের কাউকেই মারধর করেনি বলে জানান ভুক্তভোগীরা।
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার আমড়াগাছিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ আমড়াগাছিয়া গ্রামে গতকাল সোমবার রাত দুইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ, ভুক্তভোগী ও স্থানীয়রা জানায়, রাত দুইটার দিকে ওই গ্রামের ঝাটিবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. জহিরুল ইসলামের ঘরের দরজা ভেঙে একদল ডাকাত ঘরে প্রবেশ করে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে নগদ টাকা, স্বর্ণাংকার ও অন্যান্য মালামাল নিয়ে নির্বিঘ্নে চলে যায়। এ সময় নজরুল ইসলামের স্ত্রী বাড়ীতে ছিলেন না।
পরে নজরুল ইসলামের চাচা একই বাড়ীর ওষুধ ব্যবসায়ী সোবাহান হাওলাদারের ঘরে দরজা ভেঙ্গে প্রবেশ করে। বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে হঠাৎ করে সোবাহান হাওলাদার ডাকাতদল দেখে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ সময় ডাকাতরা পানি এনে তাকে পান করিয়ে সুস্থ করার পর টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে নির্বিঘ্নে চলে যায়। এ সময় বাড়ীর কেউই এ ঘটনার প্রতিবাদ করেনি।
ওষুধ ব্যবসায়ী সোবাহান হাওলাদার বলেন, রাতে বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করছিল। এর মধ্যেই তার ঘরের দরজার সিটকিনি (লক) ভেঙে হঠাৎ করেই ঘরে ঢুকে ডাকাত দল। মুখোশ পরিহিত নিজেদের ডাকাত পরিচয় দিয়ে আমাদের বেধে ফেলে। পরে আলমারি ভেঙ্গে ১ ভরি ওজনের স্বর্ণের চেইন, নগদ দশ হাজার টাকা ও অন্যান্য মালামাল নিয়ে চলে যায়। এ সময় ডাকাতরা ঘরের বিভিন্ন আসবাবপত্র তছনছ করে।
তিনি আরও বলেন, ঘরে শুধু আমি ও আমার স্ত্রী ছিলাম। আমাদের মারধর করেনি তবে বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে হঠাৎ ঘরে প্রবেশ করায় আমি ভয়ে অসুস্থবোধ করলে ডাকাতরা আমাকে পানি খেতে দেন।
শিক্ষক মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, রাত দুইটার দিকে বৈরি আবহাওয়া বিরাজ করছিলো, প্রচণ্ড বৃষ্টির মধ্যে একদল ডাকাত ঘরের দরজা ভেঙে কাপড় দিয়ে মুখ বেধে ফেলে তারা নিজেদের ডাকাত পরিচয় দেয়। ঘরের সকল আসবাবপত্র তছনছ করে নগদ আঠারো হাজার টাকা ও আড়াই ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার এবং অন্যান্য মালামাল নিয়ে পালিয়ে যায়।
মির্জাগঞ্জ অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শামীম হাওলাদার বলেন, খবর পাওয়ার পর সকালেই আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ভুক্তভোগীদের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, আবহাওয়া খারাপ ছিল। ওই দুই ঘরের একটি টিনের তৈরী পুরাতন। দরজার সিটকিনি খুবই নড়বড়ে ছিল তাই ধাক্কা দিয়েই ঘরে প্রবেশ করে। তবে তাদের কাউকেই মারধর করেনি। দুই ঘর থেকে তিন ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও ২৮ হাজার টাকা নিয়ে গেছে। এ বিষয়ে অভিযোগ দিতে বলে এসেছি। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (বিকাল সাড়ে পাঁচটা) অভিযোগ দিতে কেউই থানায় আসেননি।
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ