এক সুন্দর বিকালে- প্রহ্লাদ, মিতু, তিতলি ও রাকিব মাঠে ফুটবল খেলছিল। খেলতে খেলতে হঠাৎ তারা মাঠের এক কোণে একটি পুরনো স্মৃতিস্তম্ভ দেখতে পেল। স্মৃতিস্তম্ভটি শহীদদের স্মরণে স্থাপন করা হয়েছিল। তার পাশে একটি সাইনবোর্ডে লেখা ছিল- ‘শহীদদের শ্রদ্ধা, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে যারা আমাদের স্বাধীনতা রক্ষা করেছেন, তাদের প্রতি অমর শ্রদ্ধা।’
প্রহ্লাদ এবং তার বন্ধুরা কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে হেঁটে স্মৃতিস্তম্ভের কাছে গেল। তিতলি প্রথমে প্রশ্ন করল, ‘এটা কী?’
মিতু উত্তর দিল, ‘এটি শহীদদের স্মৃতি। যারা মুক্তিযুদ্ধে জীবন দিয়েছে, তাদের সম্মানে এ স্মৃতিস্তম্ভটি তৈরি করা হয়েছে।’
রাকিব মনে মনে অবাক হয়ে বলল, ‘এই মানুষগুলো আমাদের জন্য কী করেছেন?’
মিতু একটু থেমে বলল, ‘তাদের সাহস আর আত্মত্যাগের কল্যাণে আজ আমরা স্বাধীন, আমাদের নিজস্ব দেশ। ১৯৭১ সালে যারা জীবন দিয়েছেন, তাদের সুবাদে আমরা স্বাধীনভাবে আমাদের জীবনে এগিয়ে যেতে পারি।’
তিতলি বলল, ‘আমরা অনেক কিছুই জানি না, আমাদের দেশে কী হয়েছিল তখন?’
প্রহ্লাদ মাথা নেড়ে বলল, ‘১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতা সংগ্রামে লড়াই করেছিল। দেশের মানুষ মুক্তির জন্য জীবন দিয়েছিল। তারা স্বাধীনতার জন্য শহীদ হয়েছিল। তাদের জন্য আজ আমরা নিরাপদে, শান্তিতে থাকতে পারি।’
রাকিব কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বলল, ‘তাদের জন্য আমাদের কী করা উচিত?’
মিতু মাথা নেড়ে বলল, ‘তাদের জন্য সবচেয়ে বড় শ্রদ্ধা হবে- যদি আমরা তাদের ত্যাগের মূল্য বুঝে জীবনকে সঠিকভাবে গড়ি। পড়াশোনা করি, পরিশ্রমী হই এবং দেশের প্রতি আমাদের দায়িত্ব পালন করি। তাদের আত্মত্যাগে আজ আমরা স্বাধীন, আমাদের কাজ হবে দেশকে আরও শক্তিশালী ও সমৃদ্ধ করা।’
তিতলি বলল, ‘তাদের জন্য আমরা যদি ভালো মানুষ হই, দেশকে ভালোবেসে কাজ করি, তাহলে আত্মত্যাগ সার্থক হবে।’
সবাই একমত হয়ে কিছুক্ষণ চুপ করে দাঁড়িয়ে রইল, শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে। তারপর তারা আবার খেলার মাঠে ফিরে গেল, তবে আজকের খেলা কিছুটা আলাদা ছিল। তাদের মনে ছিল যে, শহীদদের ত্যাগের মূল্য আমরা বুঝে দেশকে ভালোবাসব এবং সেই ভালোবাসা থেকে দেশকে আরও সমৃদ্ধ করার চেষ্টা করব।