চলচ্চিত্র নির্মাতা রায়হান রাফী বলেছেন, চলচ্চিত্র শুধু বিনোদনের জন্য নয়। এর মাধ্যমে প্রতিবাদ করা যায়। সমাজ ব্যবস্থার পরিবর্তন আনা যায়। সবার কাছে সমাজের কথা তুলে ধরা যায়। সিনেমার ভিজুয়ালে অনেক কিছু সম্ভব। এগুলো মানুষের হৃদয় ছুঁয়ে যায়। সাহসের সাথে সিনেমা বানাতে পারলে সমাজ পরিবর্তন করা সম্ভব হবে।
শনিবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ কলাভবনে ম্যাজিক লণ্ঠনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত 'বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের সাম্প্রতিক গতিপ্রকৃতি এবং ভবিষ্যৎ' শীর্ষক কথামালায় এসব কথা বলে নির্মাতা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাফী বলেন, চলচিত্রের চিত্রনাট্যের সাথে সবার একটা নিজস্বতা থাকে, চিত্রনাট্যের চরিত্রের সাথে সবাই নিজেকে মিলিয়ে দেখে। আর এই চিত্রনাট্যকে একটা সুন্দর গল্পের মাধ্যমে মানুষের সামনে তুলে ধরে লেখক এবং পরিচালকরা।
চলচিত্রের সঙ্কট নিয়ে তিনি বলেন, আমাদের দেশের অন্যতম একটা সংকট হচ্ছে দেশে তেমন লেখক নেই। বিশ্বের অনেক দেশে চলচিত্র নির্মানের ক্ষেত্রে একজন গল্প লেখে, আরেকজন সিনেমা বানায়। কিন্তু আমাদের দেশে আমাদেরকেই গল্প লিখতে হয় আবার আমাদেরকেই সিনেমা বানাতে হয়। যার কারণে একটা ধারাবাহিকতার মধ্যে থাকা হয় না। এছাড়া আইনের মধ্যে অনেক ফাঁক-ফোকর আছে। দেশে যে দল ক্ষমতায় আসে তারা চাই বিরোধী দলের বিরুদ্ধে সিনেমা বানাতে।
চলচিত্রের স্বাধীনতা নিয়ে এই নির্মাতা বলেন, সবকিছু নিয়ে সমালোচনা করতে পারাটাই হচ্ছে স্বাধীনতা। কিন্তু সবকিছু নিয়ে আমরা সমালোচনা করতে পারি না। আমাদের কে বাধা দেওয়া হয়। আমাদের অনেক সিনেমা আটকে আছে সেন্সর বোর্ডে যেগুলোকে মুক্তি দেওয়া হয়নি। যেদিন আমরা একটা সত্য ঘটনা নিয়ে সিনেমা করবো এবং তা সেন্সর বোর্ডে আটকাবে না, মানুষ দেখতে পারবে তখন ই আমি নিজেকে স্বাধীন মনে করবো।
তিনি আরও বলে, নতুন বাংলাদেশে আমি কি করলাম এটা ভাবতে হবে। কে কি করলো তা না দেখে নিজে কি করলাম এটা দেখতে হবে। তাহলে দেশটা সুন্দর হবে। সবাই যদি নিজের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করে তাহলে সুন্দর করে দেশটাকে গড়া সম্ভব।
অনুষ্ঠানে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ম্যাজিক লণ্ঠনের পরিচালক কাজী মামুন হায়দার বলেন, আমাদের দেশে অদ্ভুত রকম একটা ট্রেন্ড আছে। যা বাংলাদেশের চলচ্চিত্রটাকে ধ্বংস করে ফেলছে। আশির দশকে পক্ষপাতীত্ব করে অনেক মেধাবী ডিরেক্টর অভিনেতাকে ছেঁটে ফেলা হয়েছে। ফ্রিতে সিনেমা দেখাতে যেয়ে বাংলাদেশের সিনেমা নষ্ট হয়ে গেছে।
উল্লেখ্য, ২০১২ সাল থেকে ম্যাজিক লণ্ঠন 'কথামালা' আয়োজন শুরু করেন। প্রতি বছরই এটা চলে আসছে।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত