নির্বাচন কমিশন স্বাধীন হলেও সরকার ছাড়া নির্বাচন সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচনি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠানের উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সরকারের সহযোগিতা নিয়েই আমাকে নির্বাচনটা করতে হবে। আমাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাহায্য নিতে হবে, সরকারি অফিসারদের সাহায্য নিতে হবে। প্রশাসনের সহযোগিতা নিতে হবে। তিনি বলেন, সরকার এখানে মুখ্য একটা ভূমিকা রাখবে নির্বাচন হলে; এটা (সরকার) ছাড়া সম্ভব নয়। সরকারের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ প্রতিনিয়ত হচ্ছে- বিষয়টা এমন নয়; আবার যোগাযোগ একেবারে হচ্ছে না, তাও নয়। নাসির উদ্দিন বলেন, নির্বাচনের তারিখ যথাসময়ে জানতে পারবেন, আমরা যথাসময়ে শিডিউল ঘোষণা করব; তখন জানতে পারবেন। সরকারের সঙ্গে ফরমালি-ইনফরমালি নানাভাবেই যোগাযোগ আছে, বিভিন্নভাবে যোগাযোগ হতে পারে। এমন না যে, আমরা সরকারের ধারেকাছে নেই। সংস্কারসহ সরকারের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে আমরা সম্পৃক্ত আছি। এগুলোকে ধারণ করেই এগিয়ে যেতে হবে। সময়মতো যোগাযোগ হবে, সবাই জানতে পারবেন। সময় হলে সব জানা যাবে।
নির্বাচন পরিচালনার জন্য কোনো রোডম্যাপ হাতে নিয়েছেন কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সময় এলে আপনারা সবই জানতে পারবেন। এখানে আমরা লুকিয়ে কোনো কাজ করছি না। এটা আমাদের একটা কর্মপরিকল্পনা, এটাকে আমরা রোডম্যাপ বলব না। আমাদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড করতে হবে; সেগুলো কোন সময়ে শেষ করব, কোন সময়ে শুরু করব, এটার একটা পরিকল্পনা। সেটাকে অনেকে রোডম্যাপ বলে, অনেকে পরিকল্পনা বলে। সিইসি বলেন, আমাদেরও একটা কর্মপরিকল্পনা অবশ্যই আছে, যে কোনো অফিসের একটি পরিকল্পনা থাকবে না? এত বড় একটা নির্বাচন হবে আমাদের, একটা পরিকল্পনা থাকবে না? এটা আমাদের নিজেদের ব্যবহারের জন্য, সবার জন্য না; সবার সঙ্গে শেয়ার করার জন্য না। এটা হচ্ছে আমাদের নিজস্ব, এটা সংশোধন হতে পারে, কোনো কারণে যদি অ্যাচিভ না হয়, দু-চার দিন এদিক-ওদিক হতে পারে; এটা আমাদের নিজস্ব পরিকল্পনা- এটা আমাদের আছে। এটা শুধু এখন না, আমরা যখন দায়িত্ব নিয়েছি, তখন থেকেই কর্মপরিকল্পনা আমরা হাতে নিয়েছি; কীভাবে আমরা এগিয়ে যাব? এর আগে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ও নির্বাচনি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ কর্মশালা উদ্বোধন করেন নাসির উদ্দিন। সেখানে তিনি বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচনি আচরণবিধি প্রণয়নের চেষ্টা হচ্ছে। বিভিন্ন নীতিমালা তৈরি করছি। বিভিন্ন জনের মতামত নিয়ে এটি চূড়ান্ত করা হবে। নির্বাচন পরিচালনায় প্রশিক্ষণের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, যারা মাঠপর্যায়ে কাজ করছেন, তাদের অভিজ্ঞতা অনেক বেশি। আলোচনার মাধ্যমে গ্রহণযোগ্য কিছু এলে সেটা আমরা গ্রহণ করব। প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বিস্তৃত করতে আঞ্চলিক নির্বাচনি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার উদ্যোগের কথা জানান সিইসি। ইসি সচিব আখতার আহমেদের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন নির্বাচন কমিশনার তাহমিদা আহমেদ। এ সময় অন্য নির্বাচন কমিশনাররাও উপস্থিত ছিলেন।