বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, দেশের প্রতিটি মানুষ পরিবর্তন চায়। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর থেকে মানুষ বুকভরে শ্বাস নিতে পারছে। মানুষ চায় সামনের দিনগুলো যেন ভালো হয়। ৫ আগস্টের পর নিরপেক্ষ মানুষও বিএনপির কাছে ভালো কিছুর পরিবর্তন প্রত্যাশা করে সবচেয়ে বেশি। স্থানীয় থেকে জাতীয় পর্যায়ে গণতন্ত্রের ভিত মজবুত করতে হবে। ধীরে ধীরে গণতন্ত্রের ভিত শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে হবে। গতকাল রাজধানীর কাকরাইল উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ মিলনায়তনে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) জাতীয় সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। সম্মেলনে ৩ হাজার ১১৭ জন কাউন্সিলর ড্যাবের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন। ড্যাব সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ। চিকিৎসকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, ‘ফরিদ সাহেব আছেন, একটি টিম গত আট বছর ধরে আমার মায়ের চিকিৎসা দিয়েছেন। সন্তান হিসেবে, পরিবারের সদস্য হিসেবে আমরা যা করতে পারিনি, ক্ষেত্র বিশেষে আপনারা আরও বেশি করেছেন। এজন্য আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি। এ ছাড়া এক যুগের বেশি সময় ধরে অসংখ্য নির্যাতিত মানুষকে চিকিৎসা দিয়েছেন, তাদের পক্ষ থেকেও কৃতজ্ঞতা জানাই।’রাজনৈতিক দলগুলোর অভ্যন্তরে গণতন্ত্রের চর্চা হয় না- এমন মন্তব্য পুরোপুরি সঠিক নয় দাবি করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ড্যাবের কাউন্সিল প্রমাণ করে, দলগুলোর ভিতরে গণতন্ত্রের চর্চা হয় না- এ কথা পুরোপুরি সঠিক নয়। আগামী দুই দিনে তিনি দুই জেলার সাংগঠনিক সম্মেলনে যোগ দেবেন বলেও জানান। দীর্ঘদিন প্রবাসে থাকার অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, লন্ডনে রাষ্ট্রব্যবস্থায় জবাবদিহি আছে। এখানে চিকিৎসক নির্যাতনের শিকার হলে ন্যায়বিচার পান, আবার রোগী বা অন্য কেউ সেবা না পেলে তিনিও পান ন্যায়বিচার। বাংলাদেশে সেই জবাবদিহির ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।
এদিকে আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষণার পর মিত্রদের সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছে বিএনপি। গতকাল দ্বিতীয় দিনের বৈঠকে অংশ নেন ১৮টি দলের নেতারা। গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে নির্বাচনসহ সাম্প্রতিক নানা ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়। এতে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
তিনি আগামী দিনে একসঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে নেতাদের উদ্দেশে বলেন, আমরা যারা বিগত দিনে ঐক্যবদ্ধ ছিলাম, জনগণের ভোটে বিএনপি ক্ষমতায় এলে সবাইকে নিয়েই জাতীয় সরকার গঠন করব।
প্রত্যাশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের রায়ে আমরা বাংলাদেশকে একটি গণতান্ত্রিক কল্যাণ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে পারব।
পাশাপাশি নির্বাচনের বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে এমন বক্তব্য ও বিবৃতি থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তারেক রহমান।
৩১ দফা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, দেশে জবাবদিহি প্রতিষ্ঠার জন্য বিএনপি যে ৩১ দফা দিয়েছে, সেটি নিয়ে সংস্কার কমিশন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করেছে। সরকার গঠন করতে পারলে ৩১ দফার বাস্তবায়ন হবে। দেশ গড়তে হলে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। কোনো দল বা সরকারের পক্ষে একা সেটা সম্ভব নয়।