এস আলম গ্রুপ কর্তৃক ইসলামী ব্যাংকসহ ব্যাংকিং সেক্টরে চট্টগ্রামের একচ্ছত্র অবৈধ নিয়োগ বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে ইসলামী ব্যাংক গ্রাহক ফোরাম। একইসঙ্গে সারাদেশে মেধা যাচাইয়ের মাধ্যমে সৎ ও যোগ্য প্রার্থী নিয়োগের দাবিও জানানো হয়।
রবিবার রাজধানীর দিলকুশায় ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারের সামনে আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে অবৈধ নিয়োগপ্রাপ্তদের দ্রুত অপসারণের জন্য ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন ব্যবসায়ী শাহিন আহমেদ খান, মো. মোতাসিম বিল্লাহ, মো. দেলোয়ার হোসেন, মো. ইমাম হোসাইন অ্যাডভোকেট ওয়লিউল্লাহ, হাফিজুর রহমান ও ডিএম শওকত আলী। এছাড়া সচেতন পেশাজীবী গ্রুপ, ইসলামী ব্যাংক সিবিএ ও সচেতন ব্যাংকার সমাজ একই দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, এস আলম নিজ বাড়িতে বাক্স বসিয়ে অবৈধভাবে ইসলামী ব্যাংকে পটিয়া ও চট্টগ্রামের চাকরিপ্রার্থীদের চাকরি দিয়ে ব্যাংকের সেবার মান ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা গ্রাহকদের সাথে দুর্ব্যবহার করে। কোনো সেবা চাইলে তারা ঠিকমত সেবা দিতে পারেন না। তারা চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলেন, যা আমরা বুঝতে পারি না। এ ধরনের অযোগ্য লোক দিয়ে ইসলামী ব্যাংক চালানোর চেষ্টা করলে অবিলম্বে গ্রাহকরা এ ব্যাংক ছেড়ে দিবে। তাই এ ধরনের কর্মকর্তাদের অবিলম্বে বহিষ্কার করতে হবে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, এস আলম ইসলামী ব্যাংক দখলের পর ২০১৭ থেকে ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন পদমর্যাদায় শুধুমাত্র চট্টগ্রামের ৭২২৪ জনকে অবৈধভাবে নিয়োগ দিয়েছে। এর মধ্যে ৪৫০০ জনের বেশি শুধুমাত্র পটিয়া উপজেলার। দেশের ৬৩টি জেলার চাকরিপ্রার্থীদের বঞ্চিত করে একটি জেলার প্রার্থীদের গোপনে নিয়োগ দিয়ে ব্যাংকের শৃঙ্খলা চরমভাবে ধ্বংস করা হয়েছে।
বক্তারা এস আলমের সকল অবৈধ নিয়োগ বাতিল করে অবিলম্বে মেধার ভিত্তিতে সারা দেশ থেকে যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়ার আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত এসব কর্মকর্তার যোগ্যতা ও দক্ষতা মূল্যায়নের জন্য ব্যাংক ২৭ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ’র মাধ্যমে মূল্যায়ন পরীক্ষার আয়োজন করে। এসব কর্মকর্তারা মূল্যায়ন পরীক্ষা দিতে অস্বীকার করে। ২৭ সেপ্টেম্বর এসব কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে ৫৩৮৫ জনের মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে বলা হয়। ব্যাংকের সিদ্ধান্তকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এদের একটি বড় অংশ অর্থাৎ ৪৯৭১ জন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ থেকে বিরত থাকে। এর মধ্যে ৪১৪ জন কর্মকর্তা মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংশ নেন। যারা পরীক্ষায় অংশ নেয়নি ব্যাংক তাদের ওএসডি করেছে এবং বিদ্রোহী ৪০০ জনকে চাকরিচ্যুত করেছে। পরবর্তী আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত তাদের অপারেশনাল কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এমআই