পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনিরের উপদেষ্টারা আরব সাগরের তীরে একটি বন্দর নির্মাণ ও পরিচালনার প্রস্তাব নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। শুক্রবার ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস লিখেছে, ‘দুঃসাহিসক’ সেই পরিকল্পনায় মার্কিন বিনিয়োগকারীদের পাকিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ খণিজসম্পদ খাতে প্রবেশে সাগর তীরবর্তী মাছের শহর পাসনিকে একটি টার্মিনাল হিসেবে গড়ে তোলার প্রস্তাব করা হয়েছে। পাশনি ইরান থেকে ১০০ মাইল ও পাকিস্তানের গোয়াদর থেকে ৭০ মাইল দূরে। চীনের সহায়তার তৈরি একটি বন্দরও রয়েছে সেখানে। আনুষ্ঠানিক কিছু না হলেও সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দক্ষিণ এশিয়ায় বিস্তৃত ভূ-রাজনৈতিক বিশাল পরিবর্তনকে পুঁজি করার উপায়গুলো পাকিস্তানের কর্মকর্তারা কীভাবে অন্বেষণ করছেন, ওই প্রস্তাবের মধ্য দিয়ে সেটিই ফুটে উঠছে।
পত্রিকাটির দেখা এক পরিকল্পনা অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকারীরা বেলুচিস্তানের গওয়াদার জেলায় অবস্থিত পাশনি শহরে একটি টার্মিনাল নির্মাণ ও পরিচালনা করতে পারে, যেখান থেকে পাকিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ খনিজ সম্পদে প্রবেশাধিকার পাওয়া যাবে। আফগানিস্তান ও ইরানের সীমান্তবর্তী এ প্রদেশেই প্রকল্পটি নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
পাকিস্তান সেনাপ্রধানের দুজন উপদেষ্টা বলছেন, গত মাসের শেষের দিকে হোয়াইট হাউসে ডনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের আগে কয়েক মার্কিন কর্মকর্তার কাছে ওই প্রস্তাব পৌঁছেছে। আসিম মুনিরের সঙ্গেও সেটি আলোচনা করা হয়েছে। তবে ডনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলছেন, ট্রাম্প ও তার উপদেষ্টারা সেই প্রস্তাব নিয়ে কোনো আলোচনা করেননি।
ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে সর্ম্পক বজায় রাখতে পাকিস্তানি কর্মকর্তারা প্রকাশ্য ও ব্যক্তিগতভাবে যে পরিকল্পনা বা দিকগুলো তুলে ধরছেন, সেগুলোরই একটি আরব সাগরে বন্দর নির্মাণের প্রস্তাব।
এ ছাড়া ট্রাম্প-সমর্থিত ক্রিপ্টো উদ্যোগ, আফগানিস্তানভিত্তিক আইএসআইএস-কে এর বিরুদ্ধে সহযোগিতা আরও গভীর করা, গাজা শান্তি পরিকল্পনা অনুমোদন এবং গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থের বাজারে প্রবেশের প্রস্তাবও রয়েছে পাকিস্তানের।
গত বছরের মে মাসে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সংঘাত বন্ধে ট্রাম্প কৃতিত্ব নেওয়ার পর থেকে ট্রাম্প-মুনির সম্পর্ককে ‘ঘনিষ্ঠ’ বলছেন মার্কিন ও পাকিস্তানি কূটনীতিকরা।
ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস জানায়, প্রস্তাবটি মুনিরের ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের আগে কিছু মার্কিন কর্মকর্তার সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া হয়। প্রস্তাবের নকশায় বলা হয়েছে, বন্দরটি সামরিক ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করা হবে না; বরং খনিজসমৃদ্ধ পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশগুলোর সঙ্গে রেলপথ সংযোগ স্থাপন করে বাণিজ্যিক উন্নয়ন তহবিল আকর্ষণ করাই এর উদ্দেশ্য।
রয়টার্স জানায়, পাকিস্তানের আরব সাগরে বন্দর নির্মাণে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রস্তাবের বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর, হোয়াইট হাউস এবং পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কোনো মন্তব্য করেনি। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকেও তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। সূত্র: রয়টার্স
বিডি প্রতিদিন/নাজিম