নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় বাউলশিল্পী আনিকা আক্তার অনিকার রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। গতকাল ভোরে ফতুল্লার ভুইগড় এলাকার ভাড়া বাসায় তার মৃত্যু হয়। পরে মৃতদেহ তার স্বামী হাবিবুর রহমান স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে হাবিবুর রহমানকে আটক করে অনিকার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। অনিকা মাদারীপুরের মোস্তফাকুর এলাকার জাহাঙ্গীর আলমের মেয়ে।
অনিকার বাবা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘পাঁচ বছর আগে অনিকাকে হাবিবুর ভালোবেসে বিয়ে করে। বিয়ের পর জানতে পেরেছি, সামান্য বিষয় নিয়ে ঝগড়া হলেই হাবিবুর আবার বিয়ে করত। এভাবে হাবিব পর্যায়ক্রমে অনিকার আগে চারটি বিয়ে করেছে। চার মাস আগে অনিকার কন্যাসন্তান হয়েছে। সেই সন্তান কোলে নিয়ে একাকী বিভিন্ন ক্লাবে গিয়ে গান গাইত। সারা রাত গান গেয়ে যা কামাত সেই টাকা বাসায় নিয়ে এলেই অনিকার কাছ থেকে জোরপূর্বক নিয়ে যেত হাবিবুর।’
তিনি আরও বলেন, ‘সম্প্রতি মালা নামে এক বাউলশিল্পীকে হাবিবুর বিয়ে করে। হাবিবুরের কাছে সেই বিয়ের সত্যতা জানার চেষ্টা করে অনিকা। এতে হাবিবুর আরও ক্ষিপ্ত হয়ে স্বর্ণা নামে আরেক বাউলশিল্পীকে দিয়ে অনিকাকে হত্যার চেষ্টা চালায়। গত বৃহস্পতিবার রাতে অনিকার বাসায় হামলা চালায় স্বর্ণা। এ সময় বেধড়ক মারধর করে অনিকার নাক, গলা ও হাতের সোনার গয়না খুলে নেয়।
তখন অনিকার ডাকচিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে উদ্ধার করে তাকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করায়। ওই সময় কৌশলে পালিয়ে যায় স্বর্ণা।’
অনিকাকে হত্যা করেননি দাবি করে হাবিবুর রহমান বলেন, ‘গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর থেকে এসে অনিকার খোঁজে ভাড়া নেওয়া ভুইগড়ের ফ্ল্যাটে যাই। সেখানে গিয়ে দরজায় অনেক সময় ধাক্কাধাক্কি করি। পরে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে দেখি অনিকার নিথর দেহ জানালার গ্রিলের সঙ্গে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলছে। এরপর সাইনবোর্ড প্রো-অ্যাকটিভ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক অনিকাকে মৃত ঘোষণা করেন।’
ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। তবে নিহতের পরিবার দাবি করছে পারিবারিক কলহের জের ধরে অনিকাকে হত্যা করেছে তার স্বামী হাবিবুর রহমান (২৫)। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাবিবুরকে আটক করা হয়েছে।’