বরিশালে অপসো স্যালাইন কারখানার ছাঁটাই ও বহাল শ্রমিকরা মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছেন। যে কোনো সময় বড় ধরনের সংঘাতের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। সরেজমিন দেখা যায়, গতকাল চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের প্রতিরোধের মুখে নগরের কবি জীবনানন্দ দাশ (বগুড়া রোড) সড়কে অবস্থিত অপসো স্যালাইন কারখানায় প্রবেশ করতে পারেননি বহাল থাকা শ্রমিকরা। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে কয়েকবার উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। বন্ধ হয়ে যায় তিনটি সড়ক। এতে ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ।
চাকরিতে বহাল থাকা শ্রমিকরা জানান, অপসো স্যালাইনের আইভি ফ্লুইড বিভাগের সবাই বৈধ কর্মচারী। স্টোরি প্যাক বিভাগের ৪৪৪ কর্মচারীকে নিয়ম মেনে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তাদের অনেকে পাওনাও বুঝে নিয়েছেন। কিন্তু এখন কিছু বহিরাগত ও রাজনৈতিক ব্যক্তি অবৈধভাবে আন্দোলনকারীদের পক্ষ নিয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করছে। আন্দোলনের কারণে চাকরিতে থাকা শ্রমিকরা কাজে যোগ দিতে পারছেন না। ফলে স্যালাইন উৎপাদন বন্ধ হয়ে দেশে সংকট দেখা দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
আন্দোলনরত শ্রমিকরা জানান, মালিকপক্ষ আওয়ামী লীগের লোকজন এনে তাদের ওপর চড়াও হয়ে আন্দোলন নস্যাৎ করার চেষ্টা করছে। তাই তারা পাল্টা অবস্থান নিতে বাধ্য হয়েছেন। ১৮ দিন ধরে তারা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছেন এবং স্থানীয় বাসিন্দারাও এতে সমর্থন দিচ্ছেন।
শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রাকিব মিয়া বলেন, ‘মালিকপক্ষের কোনো কৌশল কাজে আসবে না। আমরা সহিংসতা চাই না। বেআইনিভাবে চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের পুনর্বহাল না করা পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চলবে।’
স্থানীয় বাসিন্দা মুক্তা বেগম জানান, প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে শ্রমিকরা সড়ক আটকে আন্দোলন করছেন। পুলিশ সদস্যরা সড়ক খুলে দেওয়ার কোনো উদ্যোগ নেয়নি। এতে তারা ভোগান্তিতে রয়েছেন।
কোম্পানির জ্যেষ্ঠ নির্বাহী কর্মকর্তা অনিন্দ্যকুমার সরকার জানান, ‘শ্রম আইন অনুসরণ করেই স্টোরি প্যাক বিভাগের ৪৪৪ শ্রমিককে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে ৫০ ভাগ পাওনা বুঝে নিয়েছেন। কিন্তু কিছু শ্রমিক ও বহিরাগত অন্য বিভাগের কর্মীদের কাজে যোগ দিতে বাধা দিচ্ছেন। ডেঙ্গুর বিস্তার বাড়ছে। এ সময়ে স্যালাইন উৎপাদন বন্ধ থাকলে বড় ধরনের সংকট দেখা দিতে পারে।’
এদিকে চাকরিচ্যুত শ্রমিকরা নবাগত জেলা প্রশাসকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। তিনি দুই দিন সময় নিয়েছেন।